বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমলেও প্রভাব নেই দেশে

8

কাজির বাজার ডেস্ক
বিশ্ববাজারে তিনমাস ধরে চিনির দাম নিম্নমুখী। এপ্রিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ থাকা র-সুগারের দাম এর মধ্যে দু-এক সপ্তাহ বাড়লেও খুব বেশি অস্থিতিশীল হয়নি। সবমিলে প্রতি টনে প্রায় একশো ডলার কমেছে চিনির দাম। বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে দাম কমার পরিবর্তে দফায় দফায় আরও বেড়েছে। বেশি দামে কিনতে কিনতে চিনির স্বাদ রীতিমতো ‘তেতো’ হয়ে উঠছে ভোক্তার কাছে। প্রতি কেজি চিনি কিনতে হচ্ছে ১৪০ টাকায়, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিজনেস ইনসাইডার ও ট্রেডিং ইকোনমিক্সের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এপ্রিলে বিশ্ববাজারে প্রতি টন চিনি ৬৪৮ ডলারে উঠেছিল। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি এসে চিনির দাম কিছুটা কমে ৬২৪ ডলারে নামে। জুনে এসে হয়েছে ৬২০ ডলার। জুন থেকে জুলাইয়ের বর্তমান সময় পর্যন্ত টানা কমে এখন প্রতি টন চিনি ৫৫৯ ডলারে নেমেছে।
তবে উল্টো চিত্র দেশের বাজারে। কমা দূরের কথা, এই সময়ে চিনির দাম আরও বেড়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা বলছে, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। যদিও ক্রেতারা বলছেন, কোথাও কোথাও ১৫০ টাকাও রাখা হচ্ছে খোলা চিনির দাম। আর বাজারে প্যাকেটজাত চিনি এখনো উধাও।
গত কোরবানির ঈদের আগে ২২ জুন থেকে চিনির দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা করে বাড়িয়েছিলেন মিল মালিকরা। ওই সময় প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
ভারত থেকে চিনি রপ্তানি বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চিনি আসছে ব্রাজিল থেকে। ট্রেডিং ইকোনমিক্স বলছে, ব্রাজিলে চলতি মৌসুমে চিনি উৎপাদনে ভালো অগ্রগতির সম্ভাবনায় বিশ্ববাজারে সরবরাহ সংকটের উদ্বেগ কমেছে।
এছাড়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকায় সুইটনার ক্রাশিংয়ের খরচও কমেছে। ভারতীয় উৎপাদকরাও সরবরাহ বাড়িয়েছে বিশ্ববাজারে। একই সময়ে চিনিজাতীয় অন্য পণ্যের মন্থর বৈশ্বিক চাহিদার কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি আমদানিকারক দেশ চীন তাদের আমদানি কমিয়েছে। সব মিলে চিনির দাম গত তিনমাসব্যাপী নিম্নমুখী।
দেশে সিটি গ্রæপ, মেঘনা গ্রæপ, দেশবন্ধু গ্রæপ, এস আলম গ্রæপ, আব্দুল মোনেম গ্রæপ চিনি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। দাম সমন্বয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা গ্রæপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র সহকারী মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার বলেন, চিনির দাম কোথায় কমছে, আমার জানা নেই। বরং বর্তমানে যে দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে তাতে আমাদের প্রতি কেজিতে ১০ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে।