ঈদুল আযহার ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে.এম লিমন গোয়াইনঘাট থেকে

26

কে.এম লিমন গোয়াইনঘাট থেকে

আর মাত্র ২ দিন পরই মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে মানুষ। ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের পরিকল্পনাও করছে অনেকে।
ঈদ উল আযহা উপলক্ষে সিলেটের গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শনার্থী বরণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। পর্যটকদের বরণে জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাইসহ সবকটি পর্যটন স্পট কেন্দ্রিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটসমূহে নানা রকম আয়োজন চলছে। পর্যটকদের রাত্রী যাপনে বাংলাদেশ পর্যটক করপোরেশনের পর্যটন মোটেল, আবাসিক হোটেল ও গড়ে ওঠা বিভিন্ন রিসোর্ট এবং কটেজ গুলোতে চলছে সাজ সাজ রব। হোটেল রেস্টুরেন্টগুলোও নির্ধারিত কাস্টমার পর্যটকদের সেবায় ব্যতিব্যস্ত হওয়ার অপেক্ষায়। এজন্য সবকটি হোটেল রেস্টুরেন্ট নতুন রঙে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সবমিলিয়ে গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটসমূহের পর্যটন কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যে জড়িতরা অধির আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছেন। জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাই, মরকিটিলাসহ সবকটি পর্যটন স্পটে আসন্ন ঈদুল আযহার ছুটিতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের ভ্রমণ শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘœ করণে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন ও পুলিশ। জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুলের পর গত ঈদে পান্তুমাইয়ে ফ্যাসিলিটিজ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। জাফলং জিরো পয়েন্ট, বিজিবি ক্যাম্প, খাসিয়া পল্লী, দেশের একমাত্র সমতল চা বাগান, রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট, জাফলং মায়াবী ঝরনা, বিছনাকান্দি, পান্তুমাই এবং মরকিটিলায় ঈদ, পূজা এবং সরকারি বিভিন্ন ছুটিতে পর্যটক দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তাই পর্যটকদের ভ্রমণ আরামদায়ক ও নির্বিঘœ করণে প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ নির্ঘুম রাত কাটিয়ে আগন্তুকদের ভ্রমণ নিরাপদ করে থাকে। গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওয়াশ বøক, তথ্য কেন্দ্র, নৌ ও পরিবহন সুবিধা, স্বেচ্ছাসেবক এবং আনসার নিযুক্ত করে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবায় কাজ করে থাকে।
পাশাপাশি গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটসমূহে বেড়াতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীরা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ইভটিজিং, অজ্ঞান পার্টি, জুয়াড়ি, ট্যুরিস্ট গাইড, ক্যামেরাম্যান ও নৌকা চালকদের দ্বারা প্রতারিত না হতে হয় এদিক বিবেচনায় ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের কয়েকটি ইউনিট নিরাপত্তা জোরদার করে রাখে। অতীতের ন্যায় এবারো তার ব্যত্যয় হচ্ছে না। গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট এবং থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গোয়াইনঘাটের সবচেয়ে আলোচিত পর্যটন স্পট জাফলংয়ের গ্রিন রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ও জাফলং পর্যটন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলু বখত জানান, প্রতি বছর ঈদুল আযহায় ঢল নামে পর্যটক দর্শনার্থীদের। এবারো পর্যটকদের আনাগোনা আগেকার মতো অথবা বেশি হতে পারে।
এরই লক্ষ্যে আমাদের কাস্টমারদের কথা বিবেচনা করে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি।
প্যারিস হোটেল, প্যারিস রেস্টুরন্টের স্বত্বাধিকারী ও জাফলং পর্যটন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন জুবের জানান, ভ্রমণে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের নির্ভেজাল খাবার পরিবেশন এবং ন্যায্য মূল্যে সেবা প্রদানে আমরা বদ্ধপরিকর। পর্যটকরা আমাদের ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি। তাদেরকে সম্মানের সহিত খাবার পরিবেশনসহ সেবার মানসিকতা প্রদর্শন করলেও অত্রাঞ্চলের পর্যটন স্পটে পর্যটকের উপস্থিতি আরও বাড়বে। সে লক্ষ্যেই আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং সাব জোনের ইন্সপেক্টর রতন শেখ এবং গোয়াইনঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল জানান, গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটসমূহে বেড়াতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীরা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ইভটিজিং, অজ্ঞান পার্টি, জুয়াড়ি, ট্যুরিস্ট গাইড, নৌকা চালক ও ক্যামেরাম্যানদের দ্বারা প্রতারিত না হন, সে লক্ষ্যে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে পোশাক এবং সাদা পোশাকে একাধিক ইউনিট নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারে ব্যবস্থা নিয়েছি। পর্যটকদের নিরাপদ আগমন ও প্রস্থানে আমাদের সার্বক্ষণিক নজরদারি জোরদার থাকবে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান জানান, গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটসমূহে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে এবং তাদের ভ্রমণ নির্বিঘœকরণে উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। বৃষ্টিপাত ও বর্ষণমুখর পরিবেশে আমাদের গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটগুলো আপন রূপ মেলে ধরে। প্রকৃতির রূপ লাবণ্যতায় মুখরিত হয়ে উঠে প্রতিটি পর্যটন স্পট। জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুলের পর পর্যটন ফ্যাসিলিটিজ বাড়ানো হয়েছে পান্তুমাইয়ে। ভবিষ্যতে আশপাশের নতুন নতুন স্পটেও পর্যটকদের নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ভ্রমণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।