স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট নগরীর কাজিরবাজারের মাছ বিক্রেতা সোহাগ আহমদ হত্যা মামলায় তিন আসামীকে ফাঁসি (মৃত্যুদÐ) ও দুই জনকে বেকসুর খালাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। সোমবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুরে আলম ভ‚ঁইয়া চাঞ্চল্যকর এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি মোঃ জুবায়ের বখত।
তিনি বলেন, পেনাল কোডের আরেকটি ধারায় তাদের প্রত্যেককে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেন বিচারক।
ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন, সিলেট নগরীর ঘাসিটুলা সবুজ সেনা বি-বøকের ৭০ নং বাসার মইন উদ্দিন মিয়ার ছেলে মোঃ শাকিল আহমদ, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া বাবুল চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনের বাসিন্দা ও বর্তমানে নগরীর ঘাসিটুলা বেতবাজার আনোরুল ইসলামের ১৫৬ নং বাসার বাসিন্দা জয় আহমদ দিপু ও ঘাসিটুলা সবুজসেনা বি-বøকের ৭৫ নং বাসার মিনহাজ মিয়ার ছেলে সাইয়ুম আহমদ। এছাড়া মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথের জীবনপুর গ্রামের রায়খাইল এলাকার রজব আলীর ছেলে ও নগরীর ১০নং ওয়ার্ডের মোল্ল্যাপাড়ার ডি-বøকের ৫২ নং বাবুল মিয়ার ভাড়াটিয়া বাসার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান হাবিব, নগরীর কেওয়াপাড়া ১১৯ নং বাসার মৃত ইমরান হোসেনের ছেলে রুহেল ওরফে রুমেল।
আদালত সূত্র জানায়, সোহাগ আহমদ (১৭) বগুড়া সদর উপজেলার আলিয়া বাজার ঝোপগারি পূর্বপাড়া এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে এবং সিলেট নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডের মজুমদারপাড়া ময়না মিয়ার কলোনীতে ভাড়া থাকতেন। নগরীর কাজির বাজারে মাছ বিক্রি করতেন সোহাগ আহমদ। ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা তাকে ডেকে বাসা থেকে বের করে নেয়। পরবর্তীতে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর ১৬ এপ্রিল সোহাগের লাশ কোতোয়ালি থানার এলজিইডি ভবনের পেছনে গাভিয়ার খালে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার দেহে অসংখ্য ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ও হাত-পায়ের রগ কাটা ছিল। এ ঘটনায় নিহতের মা ফুল বানু বাদী হয়ে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা ও গুমের ঘটনায় মামলা করেন। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ৬ আসামিকে অভিযুক্ত করে চ‚ড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন কোতোয়ালী থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল বাতেন ভ‚ঁইয়া।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- মামুন, ডালিম, মোতালেব, সাকিল, সাইয়ুম ও দিপু। এরমধ্যে দুইজন পলাতক রয়েছেন। মামলাটি ওই আদালতে বিচারের জন্য দায়রা ৬৬৬/’১৯ মূলে রেকর্ড করে বিচার শুরু হয়। মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।