কাজির বাজার ডেস্ক
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘মোখা’ কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৮০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং মিয়ানমারের সিতওয়ে থেকে ১১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্রে বাধা না পেয়ে এটি ঘণ্টায় ৮ কি.মি. বেগে দুই দেশের উপক‚লের দিকে ধেয়ে আসছে। আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন, শুক্রবার উত্তর-পশ্চিম কিংবা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামী ১৪ মে রোববার রাতের দিকে অতি প্রবল ‘মোখা’ ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কি.মি. বেগে মিয়ানমারের কাউকপুর হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ ও মহেশখালীর মাঝামাঝি স্থান দিয়ে উপক‚লে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। ফলে সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রাবল্য সব থেকে বেশি থাকবে বলে মনে করছেন ভারতের আলীপুর আবহাওয়া অফিসের বিশেষজ্ঞরা। তারা জানিয়েছেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর ‘মোখা’র গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৮০ কি.মি.। সমুদ্রে বাধা না পেয়ে তা হু-হু করে এগিয়ে যাবে উপক‚লের দিকে। এরপর ১২ মে নাগাদ তা বাঁক নিয়ে উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। এরপরও তা শক্তি বাড়াবে। ১৪ মে দুপুরে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং উত্তর মিয়ানমার উপক‚ল অতিক্রম করবে এবং আস্তে আস্তে শক্তি হারাবে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোখাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে দেশ। বৃহস্পতিবার দুর্যোগ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ পৃথক বৈঠকে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোখাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়াসহ ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এতে পর্যাপ্ত মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা, খাবার স্যালাইনসহ জরুরি প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং সাপে কামড় দেওয়া রোগীর জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক অ্যান্টিভেনম মজুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
‘মোখা’ আতঙ্ক এবং সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত জারির পর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপক‚লে ফিরতে শুরু করেছে গভীর সমুদ্রে থাকা মাছ ধরার ট্রলার। জেলেরা বলছেন, ‘মোখা’য় আতঙ্ক থাকলে এখনো তেমন প্রভাব পড়েনি কলাপাড়ায়। তবে আক্রমণের আগেই নিরাপদে ফিরে আসা ভালো। বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীর দুটি বড় মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরের অনেক ট্রলার এরই মধ্যে বন্দরে চলে এসেছে। এমভি আব্দুল্লাহ ট্রলারের মাঝি মো. নয়া বলেন, ‘চার দিন আগে সাগরে গিয়েছিলাম। গতকাল বিকেল থেকে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হবে সংবাদ পেয়ে আমরা তীরের দিকে ফিরতে শুরু করি। আজ সকালে তীরে পৌঁছেছি। আরও অনেক ট্রলার রয়েছে যারা আসছে।’
আলীপুর-কুয়াকাটা আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘যে ট্রলারগুলো এসেছে সেগুলো পাথরঘাটা, চরদোয়ানী, তুষখালী, পিরোজপুরসহ বেশ কয়েক স্থানের। আবহাওয়া খারাপ হলে নিকটবর্তী স্থানে তারা চলে আসে। তবে যারা এখন তীরে আসেনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। যাদের পাওয়া যাচ্ছে তাদের দ্রæত তীরে ফিরে আসতে বলা হচ্ছে।’
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, ‘ঘূণিঝড় মোখা বর্তমানে পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভ‚ত হয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তী সময়ে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল থাকার আশঙ্কা রয়েছে।’ এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোখাবিলায় ঢাকায় কন্ট্রোল রুম খুলেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ নির্দেশনা। বৃহস্পতিবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১৩১৮-২৩৪৫৬০ এবং গ্রিন রোডে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর ০১৭৭৫-৪৮০০৭৫। এসব নম্বরে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য ও সেবা পাওয়া যাবে।
অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ও সচিবের রুটিন দায়িত্বে মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে আগাম প্রস্তুতিমূলক সভায় দেশের দক্ষিণাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার আশঙ্কা থাকায় সভায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কবলিত জেলার নাজুক এলাকা চিহ্নিত করে দ্রæত এলাকাবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে হবে। জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় রেড ক্রিসেন্ট ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নিতে হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় আরও নির্দেশনা দেওয়া হয়, ঘূর্ণিঝড়কবলিত জেলার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ চিহ্নিত করে ওই এলাকায় পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োজিত করাসহ ঘূর্ণিঝড়কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ সংগ্রহ, বোতলজাত পানি এবং শুকনো খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার এবং নৌযান প্রস্তুত রাখতেও বলা হয়েছে সভায়। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোখাবিলায় খুলনা ও কক্সবাজারে প্রস্তুত করা হয়েছে ৯৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে প্রায় ৬ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার প্রস্তুতিসভা শেষে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান সাংবাদিকদের জানান, ‘মোখা’ মোকাবিলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলার উপক‚লীয় এলাকার ৫৭৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ৪৯০ টন চাল, ৭ টন শুকনো খাবার ও ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন মজুত রাখা হয়েছে।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন জানান, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি শরণার্থী ক্যাম্প রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র আঘাত ও জানমাল রক্ষায় চট্টগ্রামের উপক‚লীয় চার উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং প্রায় ৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। এ ছাড়া চার উপজেলাসহ ১৫টি উপজেলায় নগদ অর্থ এবং ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। বাঁশখালী উপজেলায় ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও সাইদুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উপজেলার উপক‚লীয় এলাকা ছনুয়া, খানখানাবাদ, গÐামারা, সরল, বাহারছড়া, কাথরিয়া, সাধনপুর, পুকুরিয়া, পুইছড়ি, শেখেরখীল ও শীলকুপ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার এবং মুজিব কিল্লাসহ ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাগরে যেসব জেলে রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৭১টি ইউনিটে এক হাজার ৪২০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।’
আনোয়ারা উপজেলার ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখাবিলায় উপক‚লীয় ইউনিয়নগুলোতে এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা থাকবে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র। জেলা প্রশাসন থেকে ৪০ হাজার টাকা ও ১০ টন খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সচেতনতার জন্য মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।’
সীতাকুÐ উপজেলার ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখাবিলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী সময়ে জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য ১২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এক হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক।’
স›দ্বীপ উপজেলার ইউএনও সম্রাট খীসা বলেন, ‘উপজেলায় ১১২টি সাইক্লোন শেল্টারসহ মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজসহ মোট ১৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া উড়িরচরে তিনটি মুজিব কিল্লা ও মুছাপুর ইউনিয়নে একটি মুজিব কিল্লা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে তিন হাজার ভলান্টিয়ার। সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছে যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।’
অপরদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
‘মোখা’ মোখাবিলায় খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বৃহস্পতিবার জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখাবিলার জন্য ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ জন মানুষ এখানে অবস্থান নিতে পারবেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল করিম জানান, উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। বিপদ সংকেত জারি হলে তারা এলাকায় মাইকিং করবেন। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আমিরুল আজাদ জানান, বর্তমানে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের যে গতিপথ রয়েছে তা পরিবর্তন না হলে আপাতত ঘূর্ণিঝড় খুলনা উপক‚লে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই। তবে ঝড়ের প্রভাবে হালকা বাতাস ও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ১৩ মে থেকে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভা শেষে চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে দুর্গম এলাকা বিশেষ করে চরাঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বন্দরের নৌযানগুলো সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাছাড়া ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের পর এটি হবে প্রথম ঝড়ের অভিজ্ঞতা। এটি কাজে লাগিয়ে কাজ করবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঘূর্ণিঝড়ে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে সে ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’ জানা গেছে, আগামী ১২ ও ১৩ মে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালনের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করা হয়েছে।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, মোখা মোখাবিলায় ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত আছে এ বাহিনীর সদস্যরা। সম্ভাব্য দুর্যোগ ও ক্ষতি মোখাবিলায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র খবরে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপ ছাড়তে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যারা এখনো বসতভিটায় রয়েছেন তারাও আছেন ভয়ে। এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্বীপের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সাগরের বুকে জেগে ওঠা এই প্রবাল দ্বীপসহ মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদের তীরে অবস্থিত শাহপরীর দ্বীপে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি মোখাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীও।
উপজেলা প্রশাসন বলছে, দুর্যোগে স্থানীয়দের জন্য উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি ৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও ডাকবাংলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ জোন হিসেবে সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপের জন্য নৌবাহিনীসহ বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিমসহ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা আবদুল আজিজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে কিছু মানুষ দ্বীপ ত্যাগ করেছে। আমরাও ভাবছি পরিবার নিয়ে টেকনাফে চলে যাব। ঘূর্ণিঝড় এলে নিচু এলাকা হিসেবে দ্বীপে আঘাত হানতে পারে, কেননা সাগরের মাঝে আমাদের বসতি।