তীব্র তাবদাহে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে বাড়ছে ডায়রিয়া, জ্বর, চর্মরোগ, কাশি, মাথাব্যথা ও টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা। এমন গরমে দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে লোকজন। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ঝুঁকি আরো বেশি। এসব রোগব্যাধির কারণ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে আগেভাগে জানা থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। চিকিৎসকরা বলছেন, গরমের সময় বিশেষ কয়েকটি রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে দেখা যায়। কিন্তু কিছুটা সতর্ক হলেই এসব রোগ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখা সম্ভব। কয়েক দিন ধরে গরমে থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ভয়াবহ তাবদাহে যেন অস্থির হয়ে উঠেছে পুরো দেশের মানুষ। রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুর, পাবনা, যশোর, কুষ্টিয়াসহ দেশের ৮ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাবদাহের সঙ্গে গরম বাতাসও বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের বাকি ৫৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এ অবস্থা আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এছাড়া দেশজুড়ে তাপমাত্রা আরো বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থাটির তথ্যানুসারে, আগামী ৫ দিন পর সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এতে কিছুটা কমে আসতে পারে তাপমাত্রা। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহজেই মুক্তি মিলছে না এ সমস্যা থেকে। সারাদিন কড়া রোদের সঙ্গে প্রচÐ ভ্যাপসা গরমে সর্দি, কাশি, জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পেটের পীড়া, জ্বর-সর্দি-কাশি, চর্মরোগ, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে প্রত্যেক ঘরে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অসংখ্য মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। গণমাধ্যমে খবর আসছে কয়েক দিন ধরে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালগুলোতে এসব রোগ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন রোগীরা। শিশু ও বৃদ্ধদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে চিকিৎসকরা। গরম প্রতিরোধে পর্যাপ্ত এবং প্রয়োজনে প্রচুর জীবাণুমুক্ত পানি পান করতে হবে। হালকা ও সুতি জামা পরিধান করুন। এছাড়া গরমের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধের জন্য ফুটানো এবং বিশুদ্ধ পানি পান করুন। ফুটপাতের খোলা জায়গার খাবার খাবেন না। ধুলাবালিতে মাস্ক ব্যবহার করুন। সর্দি বা কাশির শুরুতেই ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করুন। জ্বরের মাত্রা যদি বেশি হয় বা বমিসহ পেট ব্যথা হলে দ্রæত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত স্যালাইন পান করুন এবং তিনদিনে জ্বর না কমলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আকাশে মেঘ নেই, পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা কমে গেছে। এতে কমছে না গরমের তীব্রতা। এদিকে তীব্র গরমে সারাদেশের জনজীবন অতিষ্ঠ। প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হচ্ছেন, তারা পড়ছেন অস্বস্তিতে। মানুষ প্রকৃতির ওপর নানাভাবে খবরদারি করছে। খাল-বিল, নদী-নালা দখল করা হচ্ছে। পাহাড় কাটা চলছে নির্বিচারে। কৃষিজমির ওপর নির্মিত হচ্ছে ঘরবাড়ি। এভাবে নানাভাবেই চলছে প্রকৃতির ওপর অত্যাচার। যে কারণে প্রকৃতি বৈরী হয়ে উঠছে। আবহাওয়ার এই চরমভাবাপন্ন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে আমাদের পর্যাপ্ত গাছ লাগানো দরকার। পরিকল্পিত নগরায়ণের বিকল্প নেই।