শাদমান শাবাব, শাবি
শীতের রিক্ততা শেষে প্রকৃতিতে এখন বসন্ত। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতি ফিরে পায় নতুন রূপ, নতুন প্রাণ। বসন্তের এমন দিনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) কিলোরোডের পাশে মেহগনি গাছে ঝুলে থাকা ফুটন্ত অর্কিড দেখে আসামের বিহু নাচের কথা মনে হতে পারে। বসন্তের শুরুতে আসামের মেয়েরা তাদের বিহু নাচের সময় খোঁপায় অর্কিড ফুল পড়ে।
শাবির কিলোরোডের রাস্তার দু’পাশের গাছে গাছে নতুন পাতারা যেন সবুজ ছাউনী মেলে ধরে আছে। কিছু গাছের মগডালে অর্ধমৃত পরগাছার দেখা যায়। এগুলো দেখলেই বোঝা যায় গত শীতের শুষ্কতায় এমন অবস্থা। কিলোরোডের শেষ প্রান্তে এই অর্ধমৃত অর্কিডেই ফুল ফুটেছে। মৃদু বাতাসে সার্বক্ষণিক হালকা দোল খাওয়া অর্কিডের সৌন্দর্য যে কাহারো নজর কাড়ছে।
জানা যায়, অসমীয়া এবং বাংলা ভাষায় একে কপৌ ফুল বলে। এটি অর্কিডেসি নামক অর্কিড পরিবারের সদস্য। এমন ফুটন্ত অর্কিড বন-জঙ্গলে সহজেই পাওয়া যায়। শীত এবং বসন্তের শুরুতে এই ফুল ফোটে। বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন অর্কিডের মধ্যে সহজলভ্য অর্কিড এটি এবং দেখতে খুবই সুন্দর।
এদের পাতা খাদাল, লম্বা, বায়ুমূল পুরুষ্টু ও ছড়ানো। পাতার কক্ষ থেকে ২৫-৩৫ সেমি লম্বা ঝুলন্ত মঞ্জরিতে ঠাসা ফুল থাকে। ফুল বেগুনি-সাদা এবং সামান্য সুগন্ধি থাকে। এই অর্কিড সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩শ মিটার উচ্চতায় পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও বেনিন, বার্মা, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এই অঞ্চলসমূহে এই পরাশ্রয়ী উদ্ভিদটি পাওয়া যায়। এটি গাছের জন্য ক্ষতিকারক নয়।
এই পরাশ্রয়ী অর্কিডই ভারতের আসাম এবং অরুণাচল প্রদেশের প্রধান ফুল। আসামে এটি ভালাবাসা, প্রাচুর্য, এবং আমোদের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। এজন্য এর পুষ্পবিন্যাস আসামের ঐতিহ্যবাহী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।