জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা সভায় বক্তারা : জেবুন্নেছা হক আন্দোলন ও রাজনীতির এক জীবন্ত-কিংবদন্তি

8

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনোনীত হওয়ায় সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এবং বেগম রোকেয়া ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদকপ্রাপ্ত সৈয়দা জেবুন্নেছা হক কে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। রোববার বিকেল ৪টায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ এর উদ্যোগে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সালমা সুলতানা এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব সালমা বাসিত, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহানারা বেগম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আমাতুজ জাহুরা রওশন জেবীন রুবা, মহিলা আওয়ামীলীগের নেত্রী আছিয়া শিকদার, মাধুরী গুণ, জাহানারা খানম মিলন, সিলেট সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহিদা খানম তালুকদার, সাজনা সুলতানা হক চৌধুরী, রুমা চক্রবর্তী, এডভোকেট ফারজানা রব সাথী। স্বাগত বক্তব্য জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী সাজেদা পারভীন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কৈইতুন্নেছা ও পবিত্র গীতা পাঠ করেন মাধবী ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নারী জাগরণের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম সিলেটের সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। একটা সময় নারীরা যখন সিলেটে প্রকাশ্যে রাজপথে মিছিল করতেন না, ঘর-সংসার নিয়ে ব্যাস্ত থাকতেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মহিলা সংগঠনগুলো চলতো পুরুষ রাজনীতিবিদদের পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়-স্বজন দিয়ে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে স্থানীয় রাজনীতির সেই ধারা বদলে দেন এই সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। সিলেটের অধিকাংশ মানুষের কাছে ‘ভাবী’ হিসেবে পরিচিত সৈয়দা জেবুন্নেছা হক বৃহত্তর সিলেটের নারী অধিকারের আন্দোলন ও রাজনীতির এক জীবন্ত-কিংবদন্তি। যার বর্ণাঢ্য জীবন জড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি সংগ্রামে। তাঁর কর্মময় জীবন নিয়ে ‘জ্যোতির্ময়ী’ নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে ইতোমধ্যে। এছাড়াও সৈয়দা জেবুন্নেছা হক বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদকে ভ‚ষিত হয়েছেন।
স্বামী মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হকের হাত ধরে রাজনীতিতে নামলেও পরে স্থানীয় রাজনীতিতে নারীদের সংগঠিত করতে সৈয়দা জেবুন্নেছা হক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছেন। স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যান তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় থাকেন আওয়ামী লীগের সব কর্মসূচিতে। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে দুঃসময়ে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার পুরস্কার হিসেবে তিনি দুইবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সৈয়দা জেবুন্নেছা হক তৃণমূলের, মাঠের, রাজপথের রাজনীতি করেছেন। দলের ও নেতাকর্মীদের যেকোন প্রয়োজনে সবার আগে ছুটে যান তিনি।
মহিলা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে বাড়ি বাড়ি ছুটে গেছেন তিনি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছেলের মতো, ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসতেন। বক্তারা বলেন, তিনি বঙ্গন্ধুর সাথে রাজনীতি করেছেন। রাজনীতি করছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যার সাথে। এই দীর্ঘপথ অতিক্রম করতে তাকে অনেক চড়াই উৎরাই পার হতে হয়েছে। গ্রেনেড হামলায় আহত হওয়াসহ কারাবরণ করতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্য ব্যক্তিকেই সম্মানিত করেছেন। সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে সৈয়দা জেবুন্নেছা হক বলেন, সকলের সহযোগিতা ছাড়া তার পক্ষে রাজনীতি করা সম্ভব ছিলো না। সবাই সহযোগিতা করেছেন বলেই বার বার আমাকে সম্মান দেন। এটা আমাদের সকলের অর্জন। তিনি এই অর্জন সকলের জন্য উৎসর্গ করে বলেন, এবার প্রেসিডিয়াম হয়েছি- পরিশ্রম ও ধৈর্য কখনো বিফলে যায় না। বিজ্ঞপ্তি