জগন্নাথপুরে রহস্যঘেরা বাড়ি নিয়ে তোলপাড়

12

মো.শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দিগলবাক গ্রামের একটি বাড়ি গত ৩ দিন ধরে ঘিরে রেখে পুলিশ। রহস্যঘেরা এ বাড়িতে কি রয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নন কেউ। তবুও আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না।
স্থানীয়রা জানান, দিগলবাক গ্রামের মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে একই গ্রামের আখলাকুর রহমানের ছেলে সাদিকুর রহমান আফজালকে আসামী করে একটি হুমকি-ধামকির মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সমন দিতে গত শুক্রবার থানা পুলিশ সাদিকুর রহমান আফজালের বাড়িতে যান। এ সময় আফজাল পুলিশের সাথে দুর্ব্যবহার করে এক পর্যায়ে পালিয়ে যায়। এতে পুলিশের সন্দেহ আরো বেড়ে যায় এবং বাড়িতে বোমা সহ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম রয়েছে সন্দেহে পুলিশ গত শুক্রবার থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে রেখেছে।
এর মধ্যে ৮ জুলাই রোববার সেনাবাহিনী ও র‌্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরেজমিনে মামলার বাদী মুজিবুর রহমান, প্রত্যক্ষদর্শী আলামিন (লিটন), সেলিম আহমদ (সেলু) সহ অনেকে বলেন, আফজাল এমনিতেই একজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তার বাড়িতে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম থাকতে পারে। এর আগেও আফজাল সিলেটে অস্ত্র সহ গ্রেফতার হয় এবং তার ভাই আকবর গোয়ালাবাজারে অস্ত্র সহ গ্রেফতার হয়েছিল। তাদের ভয়ে গ্রামের মানুষ আতঙ্কে থাকেন।
এদিকে-খবর পেয়ে অসংখ্য গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত হলেও বাড়িতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এক পর্যায়ে বিকেল ৩ টার দিকে ঘটনাস্থলে থাকা জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, এ বাড়িতে পুলিশের অভিযান শেষ হয়েছে। তবে এর বাইরে তিনি আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। যে কারণে অনেক প্রশ্নের জবাব মেলেনি। জানা যায়নি, আদৌ এ বাড়িতে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম আছে কি না। উদঘাটন হয়নি রহস্যঘেরা বাড়ির আসল রহস্য। যদিও এ বাড়িকে কেন্দ্র করে রীতিমতো তোলপাড় চলছে।
এদিকে, জগন্নাথপুরের ওই বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার বিকেলে উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দিঘলবাক এলাকার ওই বাড়িতে অভিযান শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদক বলেন, অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরীর সরঞ্জাম, বিস্ফোরক জাতীয় পাউডার ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা করা হয়। এ ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। বর্তমানে থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।