মাধবপুরে ট্রাক-মাইক্রোবাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষে একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন নিহত

12

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
বিদেশ থেকে বাড়ি ফেরার পথে হবিগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবপুর শাহপুর নামক স্থানে পাথর বোঝাই ট্রাকের সাথে মাইক্রোবাস ও পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩ জন। গতকাল শনিবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার শাহপুর এলাকায় মেটাডোর ইন্ডাস্ট্রির সামনে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের। তারা হলেন- মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মাদানগর গ্রামের আতিকুর রহমান শিহাব (১২), মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুস সালাম (৩৫), তার বোন সাফিয়া বেগম (২৫), ভাগ্নি হাবিবা (২) ছোটভাই সিহাব (১৩) ও মাইক্রোবাস চালক কুলাউড়ার পৃথিমপাশা গ্রামের সাদির আলী (৩০)। এ সময় গুরুতর আহতরা হচ্ছেন, প্রবাসী রাজু (২৯), তার পিতা নুরুল ইসলাম (৫০) ও চাচাতো ভাই নিশাত (১৮)।
জানা যায়, ঘন কুয়াশার মধ্যে ঢাকা থেকে বিদেশ ফেরত যাত্রী নিয়ে একটি মাইক্রোবাস মৌলভীবাজার কুলাউড়া যাবার পথে ভোর ৪টার সময় শাহপুর নামক স্থানে এসে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পাথর বোঝাই ট্রাকের সাথে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একই সময় দ্রুতগতির একটি পিকআপ ভ্যান মাইক্রোবাসের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ জন নিহত হয় ও আহত হয় আরও ৬ জন। পরে তাদের সিলেট নিয়ে গেলে সেখানে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজে পাঠালে সেখানে আরও দুজন মারা যায় বলে জানান নিহতের স্বজনরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মইনুল ইসলাম ভূইয়া।
এদিকে নিহতদের আত্মীয় আশরাফুল মামুন জানান, ইতোমধ্যে দুটি লাশ বাড়িতে এসেছে। বাকি ৩টি লাশ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরও জানান, সবগুলো লাশ আসার পর দাফনের প্রস্তুতি নেয়া হবে।
নুরুল ইসলামের চাচা হাজী মো. রইছ আলী জানান, ভোর ৪টার দিকে গাড়ীতে থাকা নিশাতের মোবাইলে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানায়। ঘটনাস্থলে চালকসহ আমার নাতি ও নাতিন জামাই মারা যান। দূর্ঘটনায় আহত আমার নাতিন সাদিয়া ও তার মেয়ে সিলেট নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান। তাদের লাশ বাড়িতে আনা হয়েছে। বাকিদের লাশ শায়েস্তাগঞ্জ থেকে আনা হচ্ছে।
নুরুলের ভাগ্না আশরাফুল মামুন বলেন, আমার মামাতো ভাই রাজুর দেশে আসা নিয়ে পুরো বাড়িতে আনন্দ ছিলো। শুক্রবার বিকেলে একমাত্র মামাতো বোন সাদিয়া তাঁর স্বামী সন্তানকে নিয়ে বড় ভাইকে রিসিভ করতে ঢাকা বিমানবন্দরে রওয়ানা দেন। সাথে ছিলেন আমার মামা ও মামাত ভাই সিহাবসহ আত্মীয় স্বজন। ফেরার পথে মামাতো বোন, ভাই, বোন জামাই ও ভাগ্নি দুর্ঘটনায় মারা যায়।
শায়েস্তাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন লিডার মুহিবুর রহমান মোবাইলে বলেন, ত্রিমুখী সংঘর্ষে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। আমরা ঘটনাস্থল গিয়ে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করি।
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমাদের থানায় তিনজন পুরুষের লাশ রয়েছে। নিহতদের স্বজনরা ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। আইনী প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।