এ বছর সিলেট মিরর পুরস্কারের জন্য নির্বাচিতদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর শিক্ষাক্ষেত্রে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. আব্দুল আজিজ, সাংবাদিকতায় বর্ষীয়ান সাংবাদিক আব্দুল মালিক চৌধুরী, ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ নাজির আহমদ চৌধুরী (ছোট নাজির) এবং সাহিত্যে ধ্রæব এষ ও আলতাফ শাহনেওয়াজকে এই পুরস্কারে ভ‚ষিত করা হয়েছে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একটি আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। সিলেট মিরর পুরস্কারের প্রতিটির অর্থমূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা। এছাড়া প্রত্যেককে স্বীকৃতি-সনদ, ক্রেস্ট, বরণ-উত্তরীয় দেওয়া হবে।
গতকাল রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) সিলেট নগরের একটি অভিজাত হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন সিলেট মিরর সম্পাদক আহমেদ নূর। এসময় উপস্থিত ছিলেন পত্রিকার প্রকাশক ফয়সল আহমদ চৌধুরী, নির্বাহী সম্পাদক জিয়াউস শামস শাহীন ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আব্দুল ওয়াছেহ চৌধুরী জুবের।
নাম ঘোষণার পূর্বে এমন উদ্যোগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সিলেট মিরর সম্পাদক আহমেদ নূর বলেন, ‘যারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে ভ‚মিকা রাখছেন তাদের অবদানের স্বীকৃতি জানানোর পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মের নাগরিকদের সৃজন-মনন উভয় ক্ষেত্রে আরো উৎসাহ জোগাতে ও দায়িত্বশীল হওয়ায় অনুপ্রাণিত করতে আমরা এমন উদ্যোগ নিয়েছি। সিলেট মিরর পুরস্কার কার্যক্রম ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘সিলেটের সাংবাদিকতার মানোন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বহুমুখী কাজ করতে চায় সিলেট মিরর। সাংবাদিক সহকর্মীদের পাশাপাশি সকলের সহযোগিতা ছাড়া তা বাস্তবায়ন কিছুতেই সম্ভব নয়।’
সিলেট মিরর পুরস্কারের নির্বাচন প্রক্রিয়া তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পুরস্কার প্রদানের জন্য পত্রিকা কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত দেশের খ্যাতকীর্তি ব্যক্তিদের নিয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট জুরি বোর্ড গঠন করেন। বোর্ডের একজন আহŸায়ক নিযুক্ত হন যার সভাপতিত্বে মূল্যায়নপ্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। জুরি বোর্ড সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করেন। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ বিভিন্নক্ষেত্রে পুরস্কারের জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত নামের তালিকা জুরিবোর্ডকে প্রদান করেন। জুরি বোর্ডের সদস্যগণ আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রতিটি ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদেরকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করেন এবং পরে নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে চ‚ড়ান্তভাবে নির্বাচিত করেন। মূল্যায়নপ্রক্রিয়ার যেকোনো অবস্থায় জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এ বছর জুরি বোর্ডের আহŸায়ক ছিলেন সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী, খ্যাতিমান নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী এবং সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুহ: হায়াতুল ইসলাম আকঞ্জি। তারা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে চারটি ক্যাটাগরিতে যোগ্যদের নির্বাচন করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ইতোমধ্যে যারা জাতীয় পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছেন তারা এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবেন না। তাছাড়া মরণোত্তর পুরস্কারের জন্য কাউকে বিবেচনা করা হবে না।’
অনুষ্ঠানে সিলেট মিরর-এর প্রকাশক ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি, সাংবাদিকতাসহ নানা ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন অনেক জ্ঞানী-গুণীরা। দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তাদের অবদান অসামান্য। তাদের এই কাজকে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। কারণ গুণীর কদর না করলে গুণীর জন্ম হয় না। আর এরকম চিন্তা থেকে সিলেট মিরর পুরষ্কার প্রবর্তন করা হয়েছে।’ আগামীতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে এসময় তিনি জানান। এক্ষেত্রে সিলেটের সাংবাদিক সমাজসহ সবমহলের সহযোগিতা কামনা করেন। এ বিষয়ে সবার পরামর্শ ও সহযোগিতা আগামীতে এ উদ্যোগকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা অনুষ্ঠানে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা, ইলেট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি