কাজিরবাজার ডেস্ক :
‘আস্থা আর ভালোবাসায় চলার পথে সাহস এবং অনুপ্রেরণা দিয়ে যায় পুরুষ’ প্রতিপাদ্যে শনিবার দেশজুড়ে নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে বিশ্ব পুরুষ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সমাজের নানা শ্রেণীর পুরুষদের উপস্থিতিতে সাইকেল র্যালি, আলোচনা সভাসহ আয়োজন করা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সামাজিক বিভিন্নখাতে অবদানের জন্য ১২ জন বিশিষ্ট পুরুষকে সম্মানিত করা হয় মেন’স এওয়ার্ডে।
বিশ্ব পুরুষ দিবসে শনিবার রাজধানী শিল্পকলা একাডেমী সড়কে পুরুষ এর প্রতি সকল বৈষম্য অপসারণ ও অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে ‘এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন’ বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সাইক্লিস্টসহ দেশের জাতীয় ভিত্তিক সমমনা সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে এক বর্ণাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে দিবসের মূল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত অর্থ সচিব ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব পীরজাদা শহীদুল হারুন। দিবসটিকে সামনে রেখে বিভিন্ন বিদ্যালয় তরুণ তরুণীও নানান শ্রেণীর মানুষদের নিয়ে বর্ণাঢ্য সাইকেল র্যালী উদ্বোধন করেন, জাতীয় ফুটবল তারকা, কায়সার হামিদ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ক্যাম্পাস পত্রিকার, প্রধান সম্পাদক, ড. এম. হেলাল, ব্রেন্ড এন্ড লাইফ হসপিটালের ব্যবস্থাপক ফখরুল হোসেন, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সাইক্লিস্টের প্রধান সমন্বয়ক মোঃ আমিনুল ইসলাম।
এদিকে একই দিন রাজধানীর একটি হোটেলে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মেন’স এওয়ার্ড সম্মাননায় ভূষিত করা হয় ১২ জন ব্যক্তিত্বকে। ফ্রেন্ডস ভিউ এড মিডিয়া এন্ড ইভেন্টেসর এই আয়োজনে মেন’স এওয়ার্ডে ভূষিত হন কবি নির্মলেন্দু গুণ, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, প্রসাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, এশিয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ, স্বপন চৌধুরী, অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, ব্যবসায়ী খন্দকার রুহুল আমীন, অভিনেতা এম এ জলিল অনন্ত, এটিএন নিউজের সিইও মীর মোতাহার হোসেন, হক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আদম তমিজী হক, আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত ক্বারী নাজমুস সাকীব। একই অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয় লাইভ মিউজিকেরও।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয় বিশ্ব পুরুষ দিবস। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জিরোম টিলাকসিংয়ের উদ্যোগে এ দিবস পালন শুরু হয়। গত শতকের ষাটের দশকেই পুরুষ দিবস পালনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের একটি নিবন্ধে বলা হয়, ২৩ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস হিসেবে পালন করতে আগ্রহী অনেকেই। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মতো একই ধরনের একটি দিবস পালন করতে চাচ্ছিলেন তারা।
এর পরের দশক থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলাদাভাবে পুরুষ দিবস পালন শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, কলম্বিয়া, রাশিয়া ও চীনে উদ্যাপন করা হতো দিবসটি। তবে ভিন্ন ভিন্ন এ উদ্যোগ তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। একসময় বন্ধও হয়ে যায়। শেষমেশ ১৯৯৯ সালে জিরোম টিলাকসিংয়ের নির্ধারিত দিনটিই বিশ্ব পুরুষ দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। সে সময় ক্যারিবীয় অঞ্চলে দিবসটি ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। পুরুষ দিবসের মূল লক্ষ্য সামাজিক আচরণ, প্রত্যাশা ও আইনগত বিষয়ে পুরুষের প্রতি বৈষম্যগুলো তুলে ধরা। নারী-পুরুষের লিঙ্গসমতার বিষয়টি জোরদার করা। পুরুষ দিবস যেসব দেশে ঘটা করে পালন করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, হাইতি, জ্যামাইকা, হাঙ্গেরি, মাল্টা ও ঘানা। চলতি বছর থেকে এই তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশের নামও।