কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
হঠাৎ করে কানাইঘাট পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ নন্দিরাই (পূর্ব সোনারতালুক) সুরমা ডাইকের ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এক ধরনের উৎকন্ঠা নিয়ে সুরমা ডাইকের ভাঙ্গন কবলিত তীরবর্তী এলাকার লোকজন বসত বাড়িতে বসবাস করছেন। ভাঙ্গনে রাস্তার পাশে অবস্থিত দোকান-পাটও দেবে গিয়েছে। বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ভাঙ্গনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যে কোন সময় ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন প্রাণ হানি সহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ভাঙ্গনের খবর পেয়ে গতকাল দুপুরে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে স্থানীয়দের আশ^স্ত করেন।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের পাকা সড়কের সংলগ্ন প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে গত এক সপ্তাহ থেকে এ ভয়াবহ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনি ভাঙ্গন ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারন করছে। পৌরসভা সহ সদর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার জনাসাধারণ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র পাকা সড়কটির বেশকিছু অংশ বড় আকারে ভাঙ্গন দিয়ে দেবে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।
স্থানীয়রা বলেছেন, দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভয়াবহ ভাঙ্গন কবলিত সুরমা ডাইকের এ স্থানটি স্থায়ীভাবে ব্লক দ্বারা বেড়ি বাঁধ দেয়া না হলে ভাঙ্গন আরো তীব্র আকার ধারণ করবে। অনেকের বসত বাড়ি থেকে শুরু করে সরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার আশপাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজরিডার অফিস, কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বনভিবাগের উপজেলা বিট অফিস, কানাইঘাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুলিশের সার্কেল অফিস, মসজিদ-শাহী ঈদগাহ, বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট রয়েছে।
পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর বিলাল উদ্দিন জানান, গত ৪ নভেম্বর হঠাৎ করে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ের সুরমা ডাইকে ভাঙ্গন দেখা দেয়। প্রতিদিন ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করে পাকা সড়ক দেবে যাওয়ার পাশাপাশি লোকজনদের দোকান-পাট ও বাড়ি-ঘর দেবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত দরখাস্ত দিলে নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি তাৎক্ষণিক বিষয়টি সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।
কাউন্সিলর বিলাল আহমদ সহ স্থানীয়রা বলছেন, ভাঙ্গন কবলিত স্থানের উভয় পাশে সুরমা ডাইক ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্লকবাঁধ থাকলেও ভাঙ্গনের স্থানে প্রায় ১০০ মিটার স্থানের কোন ব্লক বাঁধ না থাকার কারনে এ ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে টেকসই বেড়িবাঁধ ও ব্লক স্থাপন না করা হলে সুরমা ডাইকের পাকা সড়ক সহ বাড়ি-ঘর, দোকান-পাঠ, সরকারি স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।