সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটকে সংগঠনের সকল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে, বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল হুদা মুকুট পাল্টা এক বিবৃতিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সিদ্ধান্ত গঠনতন্ত্র মেতাবেক নয় উল্লেখ করেছেন। এই সিদ্ধান্ত দলের নেতাকর্মীরা গ্রহণ করেনি বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছেন নুরুল হুদা মুকুট।
সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এড. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ¦ল স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন স্বাক্ষরিত যৌথপত্রে সংগঠনের সহ সভাপতি নুরুল হুদা মুকুটকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় গঠনতন্ত্রের ৪৭ (১১) ধারা বলে সুনামগঞ্জ জেলার সহ সভাপতি পদসহ দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন,‘ সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ঘোষণার পরও নুরুল হুদা মুকুট চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা জেলা কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছি। তারপরও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন নি। বিষয়টি গত রবিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানানো হয়। ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা কমিটির পক্ষ থেকে তাকে দলের সকল পদ পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতির এই চিঠি নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটিকে পাঠানো হবে।
এদিকে, গতকাল বিকালে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নুরল হুদা মুকুট স্বাক্ষরিত পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের চিঠিকে অসাংগঠনিক উল্লেখ করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারণকে বিভ্রান্ত করার অসৎ উদ্দেশ্যে এরকম প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন ব্যতিরেকে জেলা কমিটির কোন সদস্যকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করার কোন এখতিয়ার জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেই বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন তিনি।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অগঠনতান্ত্রিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে খুব শীগ্রই জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডাকা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন তিনি। ওই সভায় সদস্যগণের মতামত নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানোর কথাও উল্লেখ করেন মুকুট।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন,‘ এই বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কোন সিদ্ধান্ত নিলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে হবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় কোন নির্দেশনা তিনি পান নি।’