হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় অধিকাংশ মানুষের জীবিকার প্রধান অবলম্বন গবাদিপশু। তবে গেল বন্যার প্রভাবে এবার গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেওয়ায় এসব পশু নিয়ে খামারিরা বিপাকে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাখাইয়ে গরুর প্রধান খাদ্য খড়ের মূল্য তিন মাস আগে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা মণ বিক্রি হলেও বর্তমানে প্রতিমণ খড় বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।
খড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গবাদিপশুর অন্যান্য খাবারের দামও। দানাদার গো-খাদ্য আগে বিক্রি হত প্রতি বস্তা ১ হাজার ১৫০ টাকায়। কিন্তু এখন এক বস্তা খাবারের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। সরিষার খৈল ও ফিড ৪০ টাকা কেজি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকায়।
লাখাই উপজেলার খড় বিক্রেতা ফজর আলী বলেন, এবার আমন ধানের ক্ষতি হওয়ায় খড়ের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বাইরে থেকে খড় কিনে এনে বিক্রি করতে হয়। এজন্য গরুর খামারিদের কাছ থেকে বাধ্য হয়ে ৮০০ টাকা মণ নিতে হচ্ছে।
খামারি নজরুল মিয়া বলেন, ৩৫০ টাকার খড় ৮৫০ টাকা হওয়ায় তিনি ১০টি গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বাজারে বেড়েছে অন্যান্য গো-খাদ্যের দামও। এ পরিস্থিতিতে এবার লোকসান গুণতে হবে।
সিংহগ্রামের গাভীর খামারি আব্দুস সহিদ জানান, তিনি ৩০ মণ খড় কিনেছেন ৮০০ টাকা দরে। এভাবে গো-খাদ্যের দাম বাড়তে থাকলে পেশা পরিবর্তন করা ছাড়া আর উপায় থাকবে না।
প্রাডুসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে লাখাইয়ে গাভীর খামার রয়েছে ১১২টি, গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ খামার ১৩৭টি, ছাগলের ৬৭ ও ভেড়ার খামার রয়েছে ৪১টি। এগুলোতে ৩৫ হাজার ১৩৯টি গরু, ২২টি মহিষ, ৫ হাজার ৪৫৮টি ছাগল ও ২৪৮৭টি ভেড়া রয়েছে।
গো-খাদ্যের সংকটের বিষয়ে লাখাই উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাডুসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বন্যার কারণে অন্যান্য বছরের মতো গো-খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এ সংকট মোকাবিলার জন্য আমরা কাজ করছি। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে ঘাস চাষের জন্য খামারিদের উদ্বুদ্ধ করছি। তাদেরকে ঘাসের বীজও সরবরাহ করা হচ্ছে।