কাজিরবাজার ডেস্ক :
সার উৎপাদনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নির্ধারিত গ্যাসের দাম মানতে চাইছে না বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। সম্প্রতি নতুন দরে সার কারখানার বকেয়া পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বিসিআইসি পধান। তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির পক্ষ থেকে এমন তথ্য জ্বালানি বিভাগকে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে সার উৎপাদনে গ্যাস দিয়ে ফেঁসে গেছে জালালাবাদ গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। শাহজালাল ফার্টিলাইজার ১১৯ কোটি টাকার গ্যাস বিল বাকি রেখেছে। বিষয়টি ধরে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, বিল দেওয়ার সময় বিইআরসি নির্ধারিত নতুন দামে বিল পরিশোধে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিসিআইসি । তারা বিল দিলেও সেটি আগের দাম ধরেই দিচ্ছে। তবে আপাতত আলোচনা করেই সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। যদিও সেই আলোচনায় বিইআরসি নির্ধারিত দরেই বিল আদায়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র বলছে, সার উৎপাদনে যে গ্যাস দেওয়া হয় ২০১৯ সালে একবারে তার দাম ২১১ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়। ওই বছরের ৩০ জুন সার উৎপাদনে পতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ২ টাকা ৭১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৪৪ পয়সা করা হয়। এর ফলে সার কারখানাগুলোর গ্যাসের বিল বেশি আসতে শুরু করে।
জ্বালানি বিভাগের সাম্প্রতিক এক বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হচ্ছে, বৈঠকে জালালাবাদ গ্যাস বিতরণ কোম্পানির তরফ থেকে জানানো হয়, তাদের বিতরণ এলাকার সার কারখানা শাহজালাল ফার্টিলাইজারের কাছে ১১৯ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। তখন ওই বৈঠকে তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, সম্প্রতি বোর্ডসভায় বিসিআইসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আগের নির্ধারিত দামে তারা গ্যাস বিল পরিশোধ করবেন। বর্তমান নির্ধারিত দামে যে বকেয়া হচ্ছে সেটি তারা এই মুহূর্তে পরিশোধ করতে পারবেন না।
জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের ঘটনা এই পথম। বিইআরসি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর কেউ মানতে চায়নি। এ ধরনের ঘটনা এর আগে ঘটেনি। যদিও এলপিজির দাম নির্ধারণ এবং তা মানা, না মানা নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে।
জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানির পরিচালক (অর্থ) আজিজুর রহমান বলেন, শাহজালাল সার কারখানা জুন মাসের ৩৩ কোটি, জুলাই মাসের ২৯ কোটি ও আগষ্টের ৬৬ কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে। তাদের চিঠি দেবো। আগের রেটে যেটা আসে সেটা তারা যেন পরিশোধ করে। বিসিআইসি চেয়ারম্যান জালালাবাদকে চিঠি দিয়েছে যেন সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করা হয়। যেন গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন না করা হয়।
শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক বলেন, আমরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করে যাচ্ছি। কী দামে পরিশোধ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের দামে বিল পরিশোধ করে যাচ্ছি। জালালাবাদ যে অভিযোগ করেছে সেটি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলে জানি।