মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজার জেলাসদরসহ সাতটি উপজেলায় সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে সর্বমোট ১ হাজার ৭টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তারমধ্যে সার্বজনীন পূজামন্ডপ রয়েছে ৮৭১টি ও ব্যক্তিগত পূজামন্ডপ রয়েছে ১৩৪টি। ইতিমধ্যে জেলা পুলিশ আইনশৃঙ্খলায় রক্ষায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন।
তবে এ বছর করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব না থাকায় বিধিনিষেধও নেই। ফলে আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের মধ্যদিয়ে সাড়ম্বরে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে এবং ৫ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এই উৎসব।
এদিকে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসবকে ঘিরে মৌলভীবাজার জেলায় সবক’টি উপজেলায় মন্ডপে মন্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে কিছু মন্ডপের রঙের কাজ শেষ হলেও কারিগরের স্বল্পতার কারণে অনেক জায়গায় মন্ডপগুলোতে প্রতিমার কাজ এখনো চলছে।
শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালনের জন্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে মৌলভীবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটি বৈঠকের মাধ্যমে নিজেদের নানা প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছেন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় সর্বমোট ১ হাজার ৭টি পূজামন্ডপে সাড়ম্বরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গত দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে পূজার আয়োজন হলেও মানুষের মাঝে একটা উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছিলো। পাশাপাশি মন্ডপগুলোতে মানুষের চলাচল সীমিত ছিলো। এ বছর করোনার প্রাদুর্ভাব না থাকায় সবার মাঝে একটা উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে। তবে প্রতিমা কারিগরদের মাঝে মূর্তি বানানোর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে হতাশা।
বিগত বছরগুলোতে মাঠি, খেড়, বাশ, দুর্গা প্রতিমাসহ অন্যান্য দেবদেবীর শাড়ী, চুড়ি আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কম থাকলেও এ বছর সেটা কয়েকগুন বেড়ে যাওয়ায় তাদের হিমসীম খেতে হচ্ছে। তবুও মায়ের পূজো বলে কথা তাই যত কষ্ট বা পরিশ্রম হোক সময় মতো প্রতিমার কাজ শেষ করতে বিরামহীন ভাবে কাজ করছেন প্রতিমা কারিগররা। অপরদিকে সাজসজ্জার দোকানগুলোতেও ভিড় বাড়ছে।
চলতি বছর সাবজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে জেলায় সর্বমোট ১ হাজার ৭টি পূজামন্ডপগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় ১০৮টি, বড়লেখা উপজেলায় ১৫১টি, জুড়ী উপজেলায় ৭২টি, কুলাউড়া উপজেলায় ২২০টি, রাজনগর উপজেলায় ১২৮টি, কমলগঞ্জ উপজেলায় ১৬০টি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় মোট ১৬৭টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্টিত হবে। এবছর করোনার প্রাদুভাব তেমনটা না থাকায় মহাদশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে শোভাযাত্রার চিন্তাভাবনা চলছে।
মৌলভীবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহিম দে মধু বলেন, পূজা মন্ডপের ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। শহর ছাড়াও শহরের বাইরে চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা এবং গ্রাম এলাকার মন্ডপগুলোতে তারা নিজেদের উদ্যোগে বিদ্যুতের ব্যবস্থাসহ পূজার পাঁচ দিন মন্ডপ পাহারার কমিটি করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াক বলেন, এবারও এক হাজারের ওপরে মন্ডপ থাকায় জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে জেলার সবকটি উপজেলায় সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা ৮৪টি পূজামন্ডপসহ সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ৭৫০ জন পুলিশ সদস্য এবং ৬ হাজার ৮২০ জন আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। তাছাড়া সাদা পোশাকে কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম। পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে। এছাড়াও প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক থাকবে।’