স্টাফ রিপোর্টার
দক্ষিণ সুরমায় আব্দুল মালিক হত্যা মামলায় পিতা-পুত্রকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদেরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ২ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আকবর হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী ইউনিয়নের উত্তরপাড়ার মনির মিয়ার পুত্র আব্দুল কাদির (২৫) ও তার পিতা মনির মিয়া মিন্টু (৫৩)। রায়ের সময় আব্দুল কাদির আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও মনির মিয়া পলাতক ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তেতলী উত্তরপাড়ায় পূর্ব শক্রতার জের ধরে আব্দুল কাদির একই গ্রামের মৃত সোনাফর আলীর পুত্র আব্দুল মালিক (৩০)কে গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে আব্দুল কাদির তার ঘর থেকে ডেগার এনে আব্দুল মালিকের বুকের বাম পাশে আঘাত করলে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটে পড়েন। এ সময় মালিককে রক্ষা না করে ঘটনাস্থলে মনির মিয়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিষয়টি দেখছিলেন। পরে স্থানীয় লোকজন আঃ মালিককে উদ্ধার করে প্রথমে দক্ষিণ সুরমা নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা মারাত্মক হওয়ায় ওই সময় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ছালিক মিয়া বাদি হয়ে আব্দুল কাদির ও মনির মিয়াকে আসামী করে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নং- ১৮ (২৮-১১-১২)। পরে এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুল কাদির সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাবিবুর রহমান চৌধুরীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর দক্ষিণ সুরমা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রঞ্জন কুমার সামন্ত পিতা-পুত্রকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। এবং ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানী ও ৯ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী আব্দুল কাদির ও মনির মিয়াকে ৩০২ ধারায় উল্লেখিত দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়।
রাষ্টপক্ষে এপিপি এডভোকেট মোঃ মফর আলী ও আসামীপক্ষে এডভোকেট স্বপন কুমার মামলাটি পরিচালনা করেন।