শাবি থেকে সংবাদদাতা :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্ব পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে পোস্টার হাতে অবস্থান নিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টা থেকে তিনি এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম সজল কুন্ডু।
সজল কুন্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী৷ তিনি গত ১৬ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির আন্দোলনে পুলিশি হামলায় আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের ছোঁড়া ছিটা গুলির আঘাতে আহত হয়েছিলেন। আন্দোলনের আগে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা করতেন সজল।
সজল কুন্ডু বলেন, ‘আমার বাঁচার সম্বল ছিলো এই ক্যাফেটেরিয়া৷ অনেক ঋণ করে দাঁড় করিয়েছি এই ব্যবসা। কিন্তু আন্দোলন পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন নিয়ম দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে নেওয়া হয়।’
সজল আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পুলিশি হামলার শিকার হয়ে আইসিইউতে ছিলাম। আমার শরীরে প্রায় ৮৩টি স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। আমার চিকিৎসার সম্পূর্ণ দেখভাল করার কথা থাকলেও অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসার ব্যাপারে আর কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। উল্টো আমি যে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা করতাম সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সেটি এখনো বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
‘কোনো সহানুভূতির জন্য নয়, আমি আমার অধিকারের দাবিতে, স্বাভাবিকভাবে বাঁচার দাবিতে এখানে দাঁড়িয়েছি’Íযোগ করেন সজল কুন্ডু।
এর আগে, গণমাধ্যমে বিভিন্নভাবে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন সজল। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলামের জানান, ‘সজল কুন্ডুকে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাকে ট্রায়াল বেসিসে (পরীক্ষামূলকভাবে) দেওয়া হয়েছিলো।’
আইআইসিটির পরিচালক আরও জানান, ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তনুযায়ী, সব নিয়ম মেনে নতুন দর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এতে আবেদন করে যোগ্যতা অনুযায়ী যে পাবে, সেই ক্যাফেটেরিয়া চালাবে। তবে কবে নাগাদ দর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে এ বিষয়ে ওই সময়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি৷
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে ছাত্রী হলের সমস্যা নিয়ে ছাত্রীরা প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার সঙ্গে কথা বলে এবং সেসময় প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করে এমন অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা তিনদফা দাবিতে আন্দোলন করে। এরপরে গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্য অবরুদ্ধ হলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে উদ্ধার করে। পুলিশি এই হামলার প্রায় ৪০ এর অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদেরই একজন সজল কুন্ডু।