ব্যবসায়ী মন্টু দেব হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

11

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের ওসমানীনগরে ব্যবসায়ী মন্টু দেব হত্যা মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অপর আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এ রায় ঘোষনা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর নাম- মাসুম আহমদ উরফে রাজু (২৫)। সে নেত্রকোনা সদর থানার বাঘমারা গ্রামের আব্দুন নুর উরফে সবুজ মিয়ার পুত্র। বর্তমানে সে ওসমানীনগর রবিদাশ (মামা সুরত মিয়ার বাড়ী)’র বাসিন্দা। অপর খালাসপ্রাপ্ত ওসমানীনগর থানার রবিদাশ গ্রামের ছুরত মিয়ার পুত্র আব্দুর রহিম (২২)। রায় ঘোষনার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাজু আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ওসমানীনগর থানার ইলাশপুরস্থ ঝলক ম্যানশনের নীচ তলায় “প্রান্ত ষ্টোর” নামের একটি দোকান পরিচালনা করে আসছিলেন মন্টু দেব। ঘটনার ৪/৫ দিন যাবৎ মন্টু দেবের দোকানে মাসুম আহমদ উরফে রাজু আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে ওই দোকানে বেশী সময় অবস্থান করত। প্রতিদিনের ন্যায় ২০১৫ সালের ২২ মার্চ রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মন্টু দেবের পুত্র নবীন দেব বাড়ি থেকে পিতার রাতের খাবার নিয়ে দোকানে আসে। এ সময় দোকানের হিসাব নিকাশ নিয়ে রাজুর সাথে মন্টু দেবের কথা হয়। ওইদিন রাতে মন্টু দেব ও রাজু রাতের খাবার খেয়ে দু’জন দোকানে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ২৩ মার্চ দোকানের অর্ধেক সাটার খোলা দেখে অন্য ব্যবসায়ীরা মন্টু দেবকে ডাকাডাকি করেন। এক পর্যায়ে মন্টু দেবের কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে তারা তার বাড়িতে খবর দেন। খবর পেয়ে তার পুত্র নবীন দেব এসে দোকানের সাটার খোলে মেঝেতে পিতা মন্টু দেবের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন এবং দোকানের ক্যাশ বাক্্র লুট করা দেখে পুলিশকে খবর দেন। তখন রাজুকে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মন্টু দেবের লাশ উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহতের পুত্র নবীন দেব বাদি হয়ে মাসুম আহমদ উরফে রাজু ও আব্দুর রহিমকে আসামী করে ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-১৪ (২৩-০৩-২০১৫)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ওসমানীনগর থানার এসআই সনক কান্তি দাশ মাসুম আহমদ উরফে রাজু ও আব্দুর রহিমকে অভিযুক্ত করে আদালতে (নং-৩৮) একটি চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং একই বছরের ১০ নভেম্বর থেকে আদালত চার্জগঠন করে এ মামলার বিচারকায্য শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী মাসুম আহমদ উরফে রাজুকে দ্যা পেনাল কোর্ট ১৮৬০ এর ৩০২ এবং ৩৮০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে অর্থদন্ডসহ যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেন এবং অপর আসামী আব্দুর রহিমের দোষ আদালতে প্রমাণিত না হওয়া আদালত তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট এসএম পারভীন ও আসামীপক্ষে এডভোকেট আব্দুল জলিল খোকন মামলাটি পরিচালনা করেন।