কাজিরবাজার ডেস্ক :
চীনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিচুয়ানে চলছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লড়াই। বিদ্যুৎ বিজ্ঞাপনের ইলেক্ট্রিক বিলবোর্ড, সাবওয়ের বাতি আর ভবনের নামফলকের আলো নিভিয়ে আর এসির নির্দিষ্ট তাপমাত্রার জন্য দেওয়া হয়েছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। বার্তা সংস্থা এএফপি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব রেকর্ড ভেঙে চলতি সিচুয়ান ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়ে গেছে। ফলে বেড়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের চাহিদা। কিন্তু তীব্র খরা আর দাবদাহের কারণে শুকিয়ে গেছে বাঁধ। ফলে জলবিদ্যুতের রিজার্ভ বর্তমানে অর্ধেকের মতো কমে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অথচ জলবিদ্যুৎই চীনের বেশিরভাগ বিদ্যুতের চাহিদা মেটায়।
তীব্র খরা আর দাবদাহের কারণে এশিয়ার দীর্ঘতম পানির প্রবাহ ইয়াংসি নদীর পানি রেকর্ড পর্যায়ে নিচে নেমে গেছে। দেশটির কোনো কোনো অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেকের কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ফলে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ সংকট। প্রাদেশিক রাজধানী চেংডুতে জাপানি কার জায়ান্ট টয়োটার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত কারখানাগুলো কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
সিচুয়ানের সরকারি অফিসগুলোকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়ানের কম রাখতে বলা হয়েছে বলে সিচুয়ান ডেইলির বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। শ্রমিকদেরও সম্ভব হলে লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চেংডুর নগর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গরম এবং আদ্র আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন ও দৈনন্দিন জীবনের জন্য শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রান্তিক সীমায় পৌঁছে গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দুই কোটি জনসংখ্যার শহরটি মুখোমুখি হয়েছে ‘সবচেয়ে চরম পরিস্থিতির’।
এদিকে, সিচুয়ানের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎই জিয়াংসু ও ঝেজিয়াংয়েরে মতো পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প কারখানাগুলোর সরবরাহ করা হয়। তাই প্রদেশটিতে বিদ্যুতের এই সংকট বৃহত্তর চীনা অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় খরা-পীড়িত ইংয়াসি নদীর আশেপাশের প্রদেশগুলো বৃষ্টির অভাবে কৃত্রিমভাবে মেঘ তৈরির দিকে ঝুঁকছে। বেশ কয়েকটি প্রদেশ আকাশে কেমিকেলবাহী রকেটও পাঠিয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে। কিন্তু মেঘের অভাবে কিছু এলাকায় এই কাজ করার প্রচেষ্টা স্থগিত করা হয়েছে।