স্টাফ রিপোর্টার :
জৈন্তাপুরের আলোচিত উসমান গনি নিশাত (১৭) হত্যা মামলার রায়ে ২ জনের আমৃত্যু ও অপর ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক ইব্রাহিম মিয়া আলোচিত এ রায় ঘোষনা করেন। রায়ে একজনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। এই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল মজিদ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল ৩টায় দীর্ঘ শুনানি, যুক্তিতর্ক ও স্বাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের লক্ষীপ্রসাদ কান্দিগ্রামের সৌদিআরব প্রবাসী মন্তাজ আলী উরফে ময়না পুত্র উসমান গনি নিশাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় আদালতে উপস্থিত ৩ আসামির সম্মুখে রায় প্রকাশ করেন। রায়ে ২ আসামি জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের চাক্তা গ্রামের সোলেমান আহমদের পুত্র রেজওয়ান আহমদ (২৮) ও দুলাল উদ্দিনের (৪২) বিরুদ্ধে ৩০২ সহ ৩৪ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ের আরও ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপর পলাতক আসামী ফখরুল ইসলাম উরফে বকুল (৪২) এবং নাজিমুর রহমান উরফে নাজিমকে (৩৫) একই ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা আত্মসমর্পন কিংবা গ্রেফতারের তারিখ থেকে সাজা কার্যকর হবে এমনটি রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। এছাড়া আসামি হোসেন আহমদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতিতভাবে প্রাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। সকল আসামীদের বাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, নাজিম উচ্চ আদালত হতে জামিন মুক্ত হয়ে রায়ের আগেই দেশ ত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে যান। বকুলও একইভাবে পলাতক রয়েছেন। তবে তিনি কোথায় আছে তা জানা যায়নি।
গতকাল বুধবার রায় ঘোষণার পর নিহত নিশাতের পিতা সৌদিআরব প্রবাসী মন্তাজ আলী ময়না বলেন, আদালতের রায়ে তিনি ও তার পরিবার সন্তুষ্ট। রায়টি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি আদালতের কাছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সনের ৩০ জুন বাড়ী হতে পার্শ্ববর্তী কানাইঘাট উপজেলার চতুল বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে উসমান গনি নিশাত (১৭) খুন হন। পরে ২ জুলাই কানাইঘাট উপজেলার দূর্গাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণ পার্শ্বে সুতারি খাল হতে জবাই করা ও বুকে আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঐ ঘটনায় উসমান গনি নিশাতের পিতা মন্তাজ আলী ময়না বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় হত্যা মামলা করেন।