পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অপপ্রচার ॥ গুজবের নেপথ্য নায়করা আজও চিহ্নিত হয়নি

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে যে গুজব ও অপপ্রচার চালানো হয়েছিল তার নেপথ্য নায়করা বিগত চার বছরেও চিহ্নিত হয়নি। কে বা কারা এই গুজব ও অপপ্রচার চালিয়েছে তা খুঁজে বের করতে উচ্চ আদালত থেকে পাঁচ বছর আগে তদন্ত কমিশন গঠন করতে যে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল আজ পর্যন্তও বাস্তবায়ন হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদ্মা সেতুর বিষয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ২০১৯ সালে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল- তারাও জামিনে ছাড়া পেয়ে মুক্ত হয়ে গেছে। দীর্ঘ চার বছরে গুজব ও অপপ্রচার ছড়ানোর অভিযোগে দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্তেও কোন অগ্রগতি নেই, বরং তদন্তের অবস্থা কার্যত হিমঘরে চলে গেছে। বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু গত ২৫ জুনে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরের দিন ২৬ জুন থেকে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর সারাদেশের মানুষের মধ্যে আনন্দ-উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা ও রক্ত লাগবে এমন গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ২০১৯ সালে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আটজনকে গ্রেফতার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে নড়াইল, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা ও রাজবাড়ী থেকে মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। আর চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ একই কারণে গ্রেফতার করে তিন জনকে। চাঁদপুর থেকে গ্রেফতারকৃতরা ছিল সদর উপজেলার ইসলামপুর গাছতলা এলাকার সেলিম গাজীর ছেলে সাজ্জাদ গাজী (২২), ফরিদগঞ্জ কাসারা এলাকার আব্দুল মান্নান ভুঁইয়ার ছেলে সায়েম ভুঁইয়া (২১), বাগড়াবাজার এলাকার মোখলেছ হাওলাদারের ছেলে আবু খালেক রতন (২৩)। র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃতরা হলেন শহীদুল ইসলাম (২৫), আরমান হোসাইন (২০), ফারুক (৫০), হায়াতুন্নবী ও পার্থ আল হাসান (১৬)। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছিল। কুমিল্লা থেকে হায়াতুন্নবী নামে এক যুবককে সে সময় এক লাখ শিশুর মাথা কেটে তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতু- ফেসবুকে এমন গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আটক করেছিল র‌্যাব।
পুলিশ সদর দফতর এ নিয়ে নাগরিকদের উদ্দেশে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সে সময়। ঐ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা ও রক্ত লাগবে, এটা গুজব।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া পুলিশ এ গুজবের বিরুদ্ধে ফেসবুকে প্রচারণা শুরু করে। পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার এআইজি সোহেল রানা তখন বলেছেন, কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা ও রক্ত লাগবে বলে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে। এটি পুরোপুরি মিথ্যা ও গুজব। এসব গুজবে কান না দেয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তখন বলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারকে ‘কুচক্রী মহলের গুজব’ বলে জানিয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তার কাছে লেখা চিঠিতে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ পরিচালনায় মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা প্রকল্প কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এটি একটি গুজব। এর কোন সত্যতা নেই। এমন অপপ্রচার আইনত দ-নীয় অপরাধ। এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
বহুল প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতির নানান গুজব ছড়ানো হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা সেসব গুজব ছড়িয়েছিল? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর দীর্ঘ চার বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও বাস্তবায়ন হয়নি হাইকোর্টের সেই আদেশ।
পদ্ম সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে উন্নয়নের প্রতীক পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি হয়। তবে সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দরপত্রে অংশ নেয়া এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক ২০১২ সালের ২৯ জুন ঋণ চুক্তিটি বাতিল করে। সরকারের অনুরোধে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর এ প্রকল্পে পুনরায় সম্পৃক্ত হতে রাজি হলেও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থায়ন করতে অসম্মতি জানায় বিশ্বব্যাংক। ওই একই ঘটনায় বিশ্বব্যাংকের শর্তের কারণে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিত্বও ছাড়তে হয়। সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে ওএসডি করা হয়। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নামও দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত হয়। এরপর দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংককে ‘না’ বলে দেয় এবং নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর বিশ্বব্যাংককে বাদ দিয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরুর প্রক্রিয়া করা হয়। পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ তদারকির পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে মামলা হয়েছিল কানাডার আদালতে। আদালত এ অভিযোগের কোন প্রমাণ না পেয়ে কানাডীয় প্রকৌশল সংস্থা এসএনসি-লাভালিনের তিন সাবেক কর্মকর্তাকে খালাস প্রদান করেন। অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট এ রায় দেন। রায়টি প্রকাশের পর পদ্মা সেতু প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায়। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের চাপে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) একটি মামলা দায়ের করেছিল। ২২ মাস তদন্ত শেষে দুদকের তদন্তকারীরা ২০১৪ সালে জানিয়ে দেন, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির কোন প্রমাণ তারা পাননি। ফলে দেশে-বিদেশে কোন আদালতেই পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি। আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হয় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অনেকের বিরুদ্ধে।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেসব প্রতিবেদন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে গুজব সৃষ্টিকারী ও প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার জন্য কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একই সঙ্গে তাদের কেন বিচারের মুখোমুখি করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এছাড়া ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে ‘ইনকোয়ারি এ্যাক্ট ১৯৬৫ (৩ ধারা)’ অনুসারে কমিশন বা কমিটি গঠন এবং এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে তা আদালতকে অবহিত করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর কয়েকদফা সময় নেয়ার পরও কমিশন গঠন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৯ নবেম্বর সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে কমিশনের সদস্য হিসেবে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক (কারিগরি) মোঃ কামরুজ্জামানের নাম সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এর পর থেকে দীর্ঘ পাঁচ বছরে মামলাটির আদেশের আর কোন অগ্রগতি হয়নি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের নাম জনগণের সামনে বেরিয়ে আসার বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির শুনানির তালিকায় পড়েনি। মামলাটি কার্যতালিকায় এলে শুনানির উদ্যোগ নেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব ও অপপ্রচার ছড়ানোর অভিযোগে দেশের বিভিন্নস্থানে দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই। এ কারণে গুজব ও অপপ্রচার ছড়ানোর সঙ্গে আরও কে বা কারা জড়িত এবং তাদের নেপথ্য নায়ক কে বা কারা তাও চিহ্নিত করা যায়নি।
কমিশন গঠন প্রশ্নে রুলের শুনানি আজ : পদ্মা সেতু নির্মাণ চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা গল্প সৃষ্টির নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানির জন্য আজ সোমবার কার্যতালিকায় রাখার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে রবিবার রুলটি শুনানির জন্য উপস্থাপনের পর এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক রুলটি শুনানির জন্য দিন ধার্যে উপস্থাপন করলে আদালত এ আদেশ দেন। একটি জাতীয় দৈনিকে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ইউনূসের বিচার দাবি : আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো একাট্টা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরদিন ওই প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের কথা উল্লেখ করে এ রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রুলে প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে ‘ইনকোয়ারি এ্যাক্ট ১৯৬৫ (৩ ধারা)’ অনুসারে কমিশন গঠন এবং দোষীদের কেন বিচারের আওতায় আনতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেন হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, আইন ও যোগাযোগ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান এবং আইজিপিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। পাশাপাশি এ কমিটি বা কমিশন গঠনের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়। পরে ওই বছরের ২০ মার্চ রুলের জবাব ও প্রতিবেদন দিতে আট সপ্তাহের সময় চেয়ে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে একই বছরের ৭ মে পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে কয়েক দফা সময়ের আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।
এর মধ্যে কমিশন গঠনের জন্য ২০১৭ সালের ৯ নবেম্বর একজন সদস্যের নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। তিনি হলেন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক (কারিগরি) মোঃ কামরুজ্জামান। পরবর্তীতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হওয়ার রুলটি আর শুনানিতে ওঠেনি।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার ঘটনা গোটা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে ওই ঘটনা ফলাও করে প্রচার করায় বাংলাদেশ এবং বর্তমান সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। সাড়ে তিন বছর আগের ওই ঘটনার পর বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি দেশী-বিদেশী কিছু ব্যক্তিত্বের দৌড়ঝাঁপ, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ক্রিয়াকর্ম ও মিডিয়ার অতি উৎসাহ পদ্মা সেতু ইস্যুতে সরকারকে বিপাকে ফেলে দেয়। যা ছিল সরকারের জন্য চরম অবমাননাকর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায়। নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেশব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে ২৫ জুন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় স্বপ্ন, আবেগ ও আত্মমর্যাদার পদ্মা সেতু নির্মিত হলো। গতকাল রবিবার সকাল থেকে পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে।