স্টাফ রিপোর্টার :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ছাতকে পানি থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে যুবক, স্কুল ছাত্রী ও শিশু রয়েছেন।
কুলাউড়া: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে আবু তালিব নামে দুই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার জয়চ-ী ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। সে ওই এলাকার মো. আব্দুল হাসিমের ছোট পুত্র।
জয়চ-ী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ফজলুল আউয়াল বলেন, সাড়ে ১২টার দিকে আবু তালিবকে তার মা খাওয়াদাওয়া করিয়ে ঘরের ভিতর খেলতে রেখে গৃহস্থালির কাজে ব্যস্ত হয়ে যান। ঘরে গেইট খুলা থাকায় পরিবারের সবার অজান্তে বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে যায়। তাকে ঘরে দেখতে না পেয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক খোঁজাখুঁজির পর পুকুরের পানিতে তালিবের দেহ ভাসতে দেখেন। সেখান থেকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তালিবকে মৃত ঘোষণা করেন।
নবীগঞ্জ: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় নিখোঁজের ২০ ঘন্টা পর মোজাক্কির মিয়া (২৫) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিজনা নদীর সদরঘাট এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। মোজাক্কির মিয়া (২৫) ওই উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট দক্ষিণ পাড়া গ্রামের ছলিম উল্লাহর পুত্র।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে নৌকাযোগে হাওড়ে কাজ করতে যায় মোজাক্কির মিয়াসহ ৩ যুবক। হাওড়ে কাজ শেষে নৌকা যোগে বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে নৌকাতে থাকা অপর দুই যুবকের অগোচরে নৌকা থেকে নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয় মোজাক্কির। সাথে থাকা ওই দুই যুবক হঠাৎ নৌকায় মোজাক্কিরকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে নদীতে নেমে আত্মীয়-স্বজন খোঁজাখুঁজি করলেও মোজাক্কিরের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিজনা নদীর সদরঘাট এলাকায় মোজাক্কিরের মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশকে খবর দিলে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. ডালিম আহমেদ ও গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক সামছুদ্দিন খান সহকারে একদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ উদ্ধার করেন। এ ব্যাপারে গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক সামছুদ্দিন খান বলেন, মোজাক্কির মৃগী রোগী ছিল বলে তার পরিবার জানিয়েছে, আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি।
ছাতক: ছাতকে নিখোঁজের ২৪ ঘন্টা পর স্কুল ছাত্রী ফাহিমা বেগম (৯)’র লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রাম সংলগ্ন বোকা নদী থেকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফাহিমা বেগম উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের টেটিয়ারচর গ্রামের ছাদিকুল ইসলামের কন্যা ও চরচৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৬ জুন সোমবার দুপুরে পরিবারের লোকজনদের না জানিয়ে গ্রাম সংলগ্ন বোকা নদীতে গোসল করতে যায় ফাহিমা। গোসল করার এক পর্যায়ে সে নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। এদিকে ফাহিমাকে বাড়িতে না দেখে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। দিনভর সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করেও ফাহিমার কোন সন্ধান পায়নি পরিবারের লোকজন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বোকা নদীতে ফাহিমার ভাসমান লাশ দেখে স্থানীয় লোকজন তার পরিবার ও পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে জাউয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে এবং কোন অভিযোগ না থাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ফাহিমার লাশ তার পরিবারের কাছে হস্থান্তর করেন।
চরমহল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত এ ব্যাপারে জানান, পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় থানা পুলিশকে অবগত করে ফাহিমার লাশ দাফন করা হয়েছে।