স্টাফ রিপোর্টার :
অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে প্লাবিত হয়ে পড়েছে সিলেটের ৫ উপজেলার নিম্নাঞ্চল। বাড়ছে নদনদীর পানিও। এরই মধ্যে সুরমা নদীর পানি দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর বিভিন্ন সড়ক। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী নিলয় পাশা জানান, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলসিদেতেও বিপদৎসীমার ওপরে বইছে। এ ছাড়া সারি ও গোয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটে ১৮ মে পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলা বৃষ্টি বেশি হবে। তিনি বলেন, শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১২৮
মিলিমিটার ও শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা জানান, সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয়েছে উজান থেকে নেমে আসা ঢল। ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট এলাকার নিম্নাঞ্চল। এই ৫ উপজেলায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। এ উপজেলায় ফসলি জমিও তলিয়ে গেছে। একই অবস্থা গোয়াইনঘাটেও।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, সিলেটের পানিবন্দি মানুষের জন্য ৭৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলায় এসব চাল বিতরণ করা হবে। তিনি জানান, এসব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে কৃষকের প্রায় পাঁচ শতাধিক হেক্টর জমির বোরো ধান। আর আউস বীজ তলিয়ে গেছে ২১ হেক্টরের মত।
তবে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে ফসলি জমি নিমজ্জিত হওয়ার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত চারদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে দেখা দিয়েছে মানুষের ভোগান্তি।
এতে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ক্ষেতের জমি তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে কোন কোন এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙে এবং তলিয়ে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার পাশাপাশি মানুষের বসতবাড়িসহ কয়েকটি হাট বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। এতে মানুষের এক ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সিলেট সদরের সাথে যোগাযোগের উপযোগী একমাত্র রাস্তা সারি-গোয়াইনঘাট রাস্তার বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। যার ফলে সিলেটের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার চরম শংকায় রয়েছেন গোয়াইনঘাটবাসী। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে গোয়াইনঘাট-রাধানগর রাস্তা।
জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে গত বুধবার থেকে গোয়াইনঘাটের ডাউকি, সারি এবং পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দুপুরের দিকে উপজেলার পুর্ব জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব আলীরগাঁও, পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং, রুস্তমপুর, ডৌবাড়ী, তোয়াকুল ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকাসহ উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের নিম্মাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়ে। এতে করে তলিয়ে যায় উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে যোগাযোগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ গ্রামীণ জনপদের অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাট। একই সঙ্গে প্লাবিত হয়ে পড়ে উপজেলার কয়েকটি হাটবাজার।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রায়হান পারভেজ রনি বলেন, পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দেয়ায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে এ পর্যন্ত ৪২০ হেক্টরের মত বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। হাওরগুলো পরিদর্শন করছি। তবে দুয়েক দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ফসলের তেমন একটা ক্ষয়-ক্ষতি হবেনা বলে আশা করা হচ্ছে।
লবীব আহমদ কোম্পানীগঞ্জ থেকে জানিয়েছেন : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আবারো হানা দিয়েছে বন্যা। পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এক মাসের ব্যবধানে আবারো বন্যার প্রাদুর্ভাবে নাজেহাল উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। তবে উপজেলা সুত্রে জানা গেছে ২/১ দিনের মধ্যে বন্যার্তদের মধ্যে সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
গত ৩ দিন থেকে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে উপজেলা উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন, ইসলামপুর পূর্ব এবং পশ্চিম ইউনিয়ন, তেলিখাল ইউনিয়ন ও ইছাকলস ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকার রাস্তা ঘাট, বাড়ি ঘর, ফসলি জমি। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়া লোকজন সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছেন। এক মাসের ব্যবধানে আবারো বন্যার কবলে পড়ায় দিশেহারা এসব মানুষ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিদ্যৎ কান্তি জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় ২/১ দিনের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হবে। ১৩ মে ১২ মেট্রিকটন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা জমা দিলে প্রতিটি ইউনিয়নে ২ মেট্রিকটন করে চাউল বিতরণ করা হবে।
কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : টানা ভারি বর্ষন ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে লোভা-সুরমা নদীর পানি বাড়তে থাকে। সুরমা নদীর প্রবল ঢলে উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের কুওরঘড়ি সুরমা ডাইকে ভয়াবহ ভাঙ্গন সহ সুরমা ডাইকের বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে বানের পানি প্রবাহিত হওয়ার কারনে উপজেলার ২নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম, ৫নং বড়চতুল, ১নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব, ৪নং সাতবাঁক, ৬নং কানাইঘাট সদর, ৩নং দীঘিরপার পূর্ব ও ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা, রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে হাজার হাজার বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
কানাইঘাট বাজার কোমর পানি থেকে হাঁটু পানি বিরাজ করায় বাজারের অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কানাইঘাট-চতুল-দরবস্ত সড়ক, কানাইঘাট-গাছবাড়ী গাজী বোরহান উদ্দিন সড়ক, কানাইঘাট-সুরইঘাট সড়ক ও কানাইঘাট-শাহবাগ-জকিগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সিলেট শহরের সাথে সব ধরনের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। কানাইঘাট সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৪২ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেওয়ায় শত শত হেক্টর বোরো ধানের মাঠ তলিয়ে গেছে। আমন ধানের বীজতলা বিনষ্ট হয়েছে। শত শত মৎস্য খামার, ফিশারি-পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। শত শত গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট কোমর পানি থেকে গলা পানি বিরাজ করায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঁচা বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেক প্রবীণ মুরব্বীরা বলেছেন ২০০৪ সালের পর এত বড় বন্যা কানাইঘাটে আর দেখা যায় নি বলে তারা জানান। কুওরঘড়ির সুরমা ডাইকে ভয়াবহ ভাঙ্গনের কারণে লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন, পৌরসভা, বড়চতুল ইউনিয়ন ও সদর ইউনিয়ন বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং সহ নদী ভাঙ্গন এলাকা সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিদর্শন করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সুরমা ডাইকের বিভিন্ন ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বিশেষ করে কুওরঘড়ি সুরমা ডাইকের ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক আফসর উদ্দিন চৌধুরী ও লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান মাও. জামাল উদ্দিন তাদের ইউনিয়নের বন্যা কবলিত প্রত্যেকটি এলাকা পরিদর্শন করে হাজার হাজার পানিবন্দী মানুষজনকে দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী ও শুকনো খাবার বিতরণের দাবী জানান এবং সরকারি ভাবে আরো বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান করেন। পানি বন্দী হয়ে পড়া অনেকে উপজেলার বিভিন্ন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
নির্বাহী সুমন্ত ব্যানার্জি জানান, কানাইঘাটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উপজেলা প্রশাসন থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সরকারি ভাবে বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ১৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। আজ থেকে তা বিতরণের প্রস্তুতি নেয়া হবে এবং শুকনো খাবারের চাহিদা জানানো হয়েছে।
বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে জানিয়েছেন : ভারী বৃষ্টিপাাত ও পাহাড়ি ঢলে তাহিরপুরে বাদাম চাষীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। পানিতে বাদাম গাছের গুড়া নষ্ট হয়ে গেছে, অনেক বাদাম ক্ষেত এখনো ঢলের পাানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে মেঘালয় সহ বৃহত্তর সিলেটে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বাদাম ক্ষেতে পানি জমে বাদাম গাছের গুঁড়া পচন ধরেছে। অনেক এলাকার বাদাম ক্ষেতের উপর দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নরে লোবার হাওর, বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা হাওরের বাদাম ক্ষেত এখনো পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
এ বছর উপজেলার বালিজুরী, তাহিরপুর সদর, দক্ষিণ বড়দল বাদাঘাট ও বড়দল উত্তর ইউনয়িনে ১২শ’ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষাবাদ করা হয়েছে। বিঘা প্রতি বাদাম চাষ করতে খরচ হয় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। ফলনও হয় ভালো। এ ফসলে কৃষকরে আয় বেড়েছে। সে জন্য অনেক কৃষক আগ্রহ করে বাদাম চাষের প্রতি ঝুকেছেন।
বাদাঘাট ইউনিয়নের গাজিপুর গ্রামের বাদাম চাষী ছমেদ মিয়া জানান, এ বছর বাদামের ফলন ভালো হয়েছিলো। গত কয়েক দিনে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বাদাম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ।
দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের রসুল পুর গ্রামের বাদাম চাষী আষোতুষ দাস বলেন। মহাজনী ঋন নিয়ে লোবার হাওরে ৩ বিঘা জমিতে বাদাম চাষাবাদ করেছিলাম। পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাদাম গাছ তলিয়ে গেছে। কিভাবে এখন মহাজনী ঋন শোধ করবো সে চিন্তায় আছি।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর ১২শ’ হেক্টরের অধিক জমিতে বাদাম চাষাবাদ করা হয়েছে। বৃষ্টিতে ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাদাম ক্ষতি হয়েছে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নির্ণয় করতে কৃষি অফিস কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান উদ দৌলা বলেন, ভারতের মেঘালয়ের প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল নেমে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে বাদাম সহ কিছু রবি শষ্যের ক্ষতি হয়েছে।