সিটি পয়েন্টকে যানজট মুক্ত রাখতে ॥ রাজা জিসি সড়কের উপর অপরিকল্পিত গার্ড ওয়াল আর নেই

7

স্টাফ রিপোর্টার :
সিটি পয়েন্টকে যানজট মুক্ত রাখতে ৭ মাস পর রাজা জিসি সড়কের অপরিকল্পিত রিক্সার লেন ভেঙ্গে দিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মেয়র অরিফুল হক চৌধুরীর উপস্থিতিতে সিটি কর্পোরেশনের সামন থেকে সিলেট হেড পোস্ট অফিস পর্যন্ত নির্মিত এ রিক্সার লেন ভেঙ্গে দেয়া হয়।
জানা গেছে, নগরভবন, সিটি সুপার মার্কেট ও সিলেট হেড পোস্ট অফিসের সামনের সড়কে যানজট কমাতে রাস্তায় গার্ড ওয়াল দিয়ে আলাদা রিকশা লেন তৈরি করেছিলো সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। লেনের ভেতরে সাড়ে ৪ ফুুট জায়গা রাখা হয়। গার্ড ওয়াল স্থাপন শেষে গত বছরের ১৯ জুলাই লেনটি চালু করা হয়। এসময় লেনের ভেতর দিয়ে রিক্সা, ভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল শুরু করে। এ লেনে দিয়ে এসব যানবাহন চলাচল করতে ট্রাফিকের পরিবর্তে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব লোক দায়িত্ব পালন করে। আর অন্যান্য গাড়ি মূল সড়ক দিয়ে চলাচল করতে থাকে। এর দুই থেকে তিন মাস পর সিটি কর্পোরেশনের লোকরা এ দায়িত্ব থেকে সরে আসে। এর পর থেকে ওই লেন দিয়ে আর রিকাশা, ভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা যায়নি। এমকি ওই লেনে হকাররা না বসে মূল সড়কে বসে প্রতিদিন মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকে। তখন অন্যান্য গাড়ীগুলো ও মানুষজন চলাচল করতো ঝুঁকি নিয়ে। কিন্তু মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে হঠাৎ ভেঙ্গে দেওয়া হলো সেই রিক্সা লেনের জন্য স্থাপন করা রাস্তার উপর গার্ড ওয়াল। ফলে রাজা জিসি সড়কের ৭ মাস আগে তৈরি করা সেই লেন এখন আর নেই।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে গিয়ে দেখা যায়, সিসিকের তৈরি করা সেই রিক্সা লেনের গার্ড ওয়াল হাতুড়ি দিয়ে ভাঙছেন কয়েকজন শ্রমিক। এ সময় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে তদারকি করতে দেখা গেছে। আর ভাঙা ইট সিসিকের ট্রাকে তুলে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। শ্রমিকরা জানান, সিসিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তারা এই গার্ড ওয়াল ভাঙছেন।
নগরভবন, সিটি সুপার মার্কেট ও সিলেট হেড অফিসের সামনের ফুটপাত এবং রাস্তা থেকে ভ্রাম্যমাণ দোকানদারদের কিছুতেই যেন সরাতে পারছিলেন না সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রতিদিনই অভিযান, প্রতিদিনই পুলিশ-সিসিক কর্মী এবং হকারদের মধ্যে চলছিলো লুকোচুরি খেলা। এ সড়ক পুরোপুরি দখলমুক্ত করতে এবং এখানের যানজট কমাতে গত বছরের জুলাই মাসের প্রথম দিকে সিসিক মেয়র আরিফ নেন ভিন্ন এক উদ্যোগ। নগরভবনের সামনে থেকে লালদীঘির পার রাস্তায় প্রবেশের মুখ পর্যন্ত সড়কের (ফুটপাতের দিকের) পাশ দিয়ে দেড় ফুট উচ্চতার গার্ড ওয়াল স্থাপন করে আলাদা লেন তৈরি করে সিসিক। গার্ড ওয়াল স্থাপন শেষে গত বছরের ১৯ জুলাই লেনটি চালু করা হয়। এ সময় লেনের ভেতর দিয়ে রিক্সা, ভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল শুরু করে। আর অন্যান্য গাড়ি মূল সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এ সময় রিক্সা-ভ্যান যাতে লেনের ভেতর দিয়ে চলাচল করে সেজন্য দু-মাথায় কর্মী নিয়োজিত রাখে সিসিক। যে সকল রিকশা লেনের ভেতর দিয়ে যেতে আগ্রহী নয় সেগুলোকে ভেতর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য করেন সিসিক কর্মীরা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, নগরভবন, সিটি সুপার মার্কেট ও সিলেট হেড অফিসের সামনের রাস্তার অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল করে হকাররা মালামাল বিক্রি করেন। ফলে এ স্থানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। নগরবাসী এ সড়কে চলাচলকারীদের পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি। এ স্থান হকারমুক্ত করে মানুষের ভোগান্তি দূর করতে নগরভবনের সামনে থেকে লালদিঘীর পাড় রাস্তায় প্রবেশের মুখ পর্যন্ত সড়কের (ফুটপাতের দিকের) পাশ দিয়ে ১০ ইঞ্চি পুরো দেড় ফুট উচ্চতার গার্ড ওয়াল স্থাপন করে লেন তৈরি করেছে সিসিক। তিনি আরো বলেন, লেনের ভেতরে সাড়ে ৪ ফুট জায়গা রাখা হয়েছে। এ লেন দিয়ে অনায়াসে রিক্সা, ভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করবে। আর অন্যান্য গাড়িগুলো চলাচল করবে মূল সড়ক দিয়ে। কিন্তু মেয়র আরিফের এ কৌশল বেশি দিন কাজ করেনি। কিছুদিনের মধ্যেই সেই লেনসহ রাস্তার অর্ধেকজুড়ে আবার ফিরে আসেন হকাররা। ফলে এই স্থানে আগের চাইতে আরো বেশি যানজট ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এই অবস্থায় ৭ মাস পর সরিয়ে ফেলা হলো সিসিকের ‘অপরিকল্পিত’ সেই রিকশা লেন।