কাজিরবাজার ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে দেশগুলোর কোনো র্যাংকিং বা তুলনা করা হয় না। এটি কোনো নির্দিষ্ট বছরে একটি দেশে ঘটে যাওয়া প্রতিটি মানবাধিকার-সম্পর্কিত ঘটনাকে সূচিবদ্ধ করার চেষ্টা করে না।
মানবাধিকার প্রতিবেদনে সুপারিশ বা নীতিগত পরামর্শও থাকে না।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) ২০২১ সালের যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানান।
মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালের মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ৭টি ক্ষেত্রের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে-১. ব্যক্তির মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা, যা বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন ও বিধিবহির্ভূত গ্রেফতারের সঙ্গে সম্পর্কিত; ২. নাগরিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা, যার মধ্যে রয়েছে মতপ্রকাশ, সমাবেশ ও সমিতি, ধর্মপালন ও চলাফেরার স্বাধীনতা এবং শরণার্থীদের সুরক্ষা; ৩. রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের স্বাধীনতা; ৪. সরকারের দুর্নীতি ও স্বচ্ছতার অভাব; ৫.মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি তদন্তের প্রতি সরকারের মনোভাব; ৬. বৈষম্য ও সামাজিক হয়রানি, যার মধ্যে রয়েছে নারী, শিশু, যৌন ও লৈঙ্গিক সংখ্যালঘু, জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী, এবং শারিরীক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার; ৭. শ্রমিক অধিকার, যার মধ্যে রয়েছে ইউনিয়ন ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের অধিকার এবং জোরপূর্বক শ্রম, শিশুশ্রম ও নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য নিষিদ্ধ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাটি শুরু হয় ‘সার্বজনীন’ শব্দটি দিয়ে। কারণ, দেশগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, নির্দিষ্ট কিছু অধিকার বিশ্বের সব জায়গার, সব মানুষই ভোগ করবে। যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই ৫০তম বার্ষিকীতে গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকারের উন্নয়ন সবার ওপরে থাকবে। যুক্তরাষ্ট্র শুধু মানবাধিকার ও এর লঙ্ঘন নিয়েই রিপোর্ট করে না। আমরা দেশগুলোর পাশে থেকে পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করি।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনটি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির একটি বস্তুনিষ্ঠ বিবরণ উপস্থাপনের চেষ্টা করে। প্রতিবেদনে ২০২১ সালের জন্য ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেন, এই দেশভিত্তিক প্রতিবেদনগুলো কী, তা বোঝা মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো বাস্তবভিত্তিক প্রতিবেদন। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই প্রতিবেদনগুলো তৈরির জন্য গোটা বিশ্বে তার যত মিশন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ভেতরে ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কাজ করেছে এবং শ্রম অধিকার, পুলিশ ও নিরাপত্তা ইস্যু, নারীদের ইস্যু ও আরও অনেক বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে। সকল তথ্য বস্তুনিষ্ঠভাবে, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, ন্যায্যভাবে রিপোর্ট করাই এর দিক-নির্দেশক মূলনীতি।
তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস, নির্বাহী বিভাগ, নাগরিক সংগঠন, শিক্ষাবিদ, অ্যাক্টিভিস্ট এবং সব জায়গার মানুষেরা এই দেশভিত্তিক প্রতিবেদনগুলোর তথ্য ব্যবহার করে। মানবাধিকারের উন্নয়নে এবং এর অবমাননা ও লঙ্ঘনের জবাবদিহি করার ক্ষেত্রে এদের সবার ভূমিকা আছে।