মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অবশেষে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এতে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি।
জানা গেছে, এবার জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওর সহ সকল হাওরে ২০ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়। সরকারি ভাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিকটন ধান। জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শে জমি আবাদে আরো উদ্বুব্দ হন কৃষকরা। বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয় সার-বীজ সহ কৃষি উপকরণ। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় জমিতে বাম্পার ফলন হয়। এর মধ্যে গত প্রায় ২ সপ্তাহ আগে হঠাৎ করে নদ-নদীতে পানি বাড়তে থাকে। পাহাড়ি ঢলের পানি নদী ভরে গিয়ে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধে চাপ দেয়। এতে ঝুঁকিতে পড়ে যায় বাঁধের কয়েকটি প্রকল্প এলাকা। এ সময় জেলার অন্য উপজেলার বিভিন্ন হাওর তলিয়ে যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জগন্নাথপুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাঁধের ঝুঁিকপূর্ণ স্থানগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ। দিনরাত চলে বাঁধে কাজ। সকলের প্রাণপন চেষ্টায় বাঁধ রক্ষা হয়। কয়েক দিন পর কমতে শুরু করে নদীর পানি। এতে হাওরগুলো অনেকটা শঙ্কামুক্ত হলেও দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। আশা-নিরাশায় হতাশ থাকা কৃষকদের মুখে হাসি ফিরিয়ে দেয় ধান কাটা উৎসব। এতো সবের মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওর সহ বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ১১ এপ্রিল সোমবার দেখা যায়, হাওরে ধানকাটা চলছে। এ সময় স্থানীয় কৃষকরা জানান, ব্রি-২৮ জাতের ধান কাটা শুরু হলেও ব্রি-২৯ জাতের ধান এখনো পাকেনি। আরো প্রায় সপ্তাহ ১০ দিন পরে পুরোদমে ধান কাটার ধুম পড়বে। এখন অল্পঅল্প ধান কাটা চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, জমির পাকা ধান দ্রুত কর্তনের জন্য হাওরাঞ্চলে মাইকিং করা হচ্ছে। ফসল রক্ষা বাঁধে কোন সমস্যা না হলে ও প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে আগামী ২ মে এর মধ্যে শতভাগ ধান কর্তন শেষ হবে এবং কৃষক ভাইদের গোলায় উঠবে বাম্পার ফসল।