কুলাউড়ার মেরিনা চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন

78

শাহ আলম শামীম কুলাউড়া থেকে :
কুলাউড়া উপজেলার মেরিনা চা বাগানে ৩ চোরকে শ্রমিকরা গণধোলাই দেয়। গণধোলাইর শিকার চোরেরা থানায় মামলা দিলে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। গতকাল সোমবার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। মামলা প্রত্যাহার না হলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালনের ডাক দেয়ার হুমকি দিয়েছে শ্রমিকরা।
বাগানের শ্রমিকরা জানায়, কুলাউড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নেহার বেগমের বাসায় কাজ করত বাগানের বাংলা টিলার এক মহিলা শ্রমিক। সে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাসার সোনা গয়না চুরি করে পালিয়ে বাগানে চলে আসে। গত ২৯ নভেম্বর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বাগানে গিয়ে ওই মহিলা শ্রমিকের ঘরে রাখা চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। কিন্তু ওই মহিলা শ্রমিকের পরিবারের লোকজন ভাইস চেয়ারম্যানকে উল্টো অবরুদ্ধ করে রাখে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিষয়টি স্থানীয় জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরুকে অবহিত করেন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বারসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাগান পঞ্চায়েতসহ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে মুক্ত করেন বলে জানান জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন কমরু। তিনি আরও জানান, এ সময় বাগানের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রুবেল (২৫), মুকিত (৩৫) ও রইস (৫২) নামক ৩ ব্যক্তিকে গণধোলাই দেয় এবং ২ জনের চোখে চুন লাগিয়ে দেয়। বাগান শ্রমিকদের মতে এরা গরু চুরি, ডাকাতি ও নারী নির্যাতনকারী। গণধোলাইয়ের শিকার রুবেল ও মুকিতকে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করাহলে তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবশ্য বাগান কর্তৃপক্ষ রাতে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এদিকে গণধোলাইর শিকার শ্রমিকদের পক্ষে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি ও সম্পাদকসহ ১৭ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামী করে রবিবার ৩০ নভেম্বর আহত রইস মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে থানায় মামলা দায়েরের খবর পেয়ে গতকাল সোমবার সকাল থেকে বাগানের শ্রমিকরা কাজ না করে বাগানের মন্ডপে অবস্থান নেয়। বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি খোকা নায়েক ও সম্পাদক ওয়াসিম মিয়াসহ বাগানের নিরীহ শ্রমিকদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। নয়তো বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করা হবে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানা অফিসার ইনচার্জ অমল কুমার ধর জানান, বাগান কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কোন উপায় নেই। দু’জন মানুষকে তারা মেরে তাদের চোখে চুন লাগিয়ে দিয়েছে। মামলায় যারা আসামী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।