মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর সদরের বুক চিরে বয়ে গেছে নলজুর নদী। এক সময় নলজুর নদীতে বড় বড় নৌযান চলাচল করলেও কালের পরিক্রমায় নদীর অধিকাংশ ভরাট হয়ে গেছে। তাই নদীকে আবার জীবিত করার লক্ষে বিগত ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নদী খনন কাজ শুরু হয়। চলবে চলতি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ থেকে ৪২ মিটার প্রস্থ ও ১ কিলো ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে খনন কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নেশন টেক লিমিটেড।
এর মধ্যে ২০২১ সালে এলোমেলো ভাবে খনন করে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের শুরু থেকে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নদীর এক পাড়কে বারবার খনন ও অন্য পাড়কে ভরাট করে নদীকে খালে পরিণত করা হয়। এ নিয়ে জন ক্ষোভের শেষ নেই। এবার আরো ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বর্ধিত করে আাবার খনন কাজ শুরু হয়। এবার দায়সারা গোচের কাজ দেখে জনমনে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নদীর এক পাড়কে বারবার খনন করা হলেও আরেক পাড়কে খনন করা হয়নি বরং ভরাট করে দেয়া হয়েছে। এতে নদীটি রীতিমতো খালে পরিণত হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন কর্তৃপক্ষ। পরে নদীর একাংশ সুন্দর ভাবে কাজ করা হলেও অন্য অংশে এখনো বাকি রয়েছে। নদীর এক পাড়কে বারবার খনন করা হলেও আরেক পাড় খনন করা হয়নি। বরং মাটি ভরাট করে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে জন ক্ষোভের যেন শেষ নেই।
এর মধ্যে কাজ চলাকালীন অবস্থায় ২ এপ্রিল শনিবার সকালে নদীতে পানি চলে এসেছে। নতুন পানিতে মানুষ বিভিন্ন জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। এ সময় নদীর খননকৃত এক পাশ দিয়ে পানি চলাচল করলেও আরেক পাশ এখনো উঁচু রয়েছে। তাই সরু হয়ে যাওয়া স্থান দিয়ে দ্রুত গতিতে পানি চলাচল করছে। যদি পুরো নদী খনন করা হতো, তাহলে স্বাভাবিক গতিতে পানি চলাচল করতো বলে প্রত্যক্ষদর্শী পথচারীরা জানান। এদিকে-নদীতে পানি আসায় নদী খনন কাজ থমকে গেছে। আর কাজ হবে কি না এ নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী হাসান গাজী জানান, গত বছরের কাজের হিসাব শেষ হয়ে গেছে। এবার কাজ বেড়ে যাওয়ায় টাকাও বর্ধিত করা হয়। এর মধ্যে এবার প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগামী জুন পর্যন্ত সময় আছে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যেই বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজের ডিজাইন অনুসারে এক পাড়কে বারবার খনন করা হয়েছে। তবে আরেক পাড়কেও খনন করা হবে। এক কথায় নদীতে কোন মাটি রাখা যাবে না। অবশ্যই পুরো নদী খননের আওতায় আসবে। তবে এখন নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানি এসেছে। আশা করছি, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পানি চলে যাবে। নদীর পানি চলে গেলে বাকি কাজ করা হবে। যদি পানি না যায়, তবে সময় বর্ধিত করে হলেও খনন কাজ শেষ করা হবে।