দ্রব্যমূল্য নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনা ॥ বাজারে গেলে মনে হয় না সরকার আছে

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বিএনপির সদস্যরা। এ সময় জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘বাজারে গেলে মনে হয় না সরকার আছে।
মনে হয় না সরকারের কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ আছে। ’
সোমবার (২৮ মার্চ) একাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তারা সমালোচনায় মুখর হন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রধানমন্ত্রী রবিবার (২৭ মার্চ) বলেছেন, যারা দেশের উন্নয়ন দেখে না তাদের চোখ নষ্ট, তাদের চোখের চিকিৎসা করানো দরকার। প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করি, আমরা দেখতে পাচ্ছি, উন্নয়ন হচ্ছে। অনেক কিছু হচ্ছে। কিন্তু আমরা আরও দেখতে পাচ্ছি, সারাদেশের মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে হাহাকার করছে। ’
চুন্নু আরও বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস অনেক আছে, কোনো অভাব নেই। তারপরও বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। শুধু তাই না, আমাদের খাদ্যমন্ত্রী বললেন, গুদামে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি প্রায় ২০ লাখ টন খাদ্য মজুদ আছে। তারপরও চালের দাম এত বেড়েছে কেন? বাজারে গেলে মনে হয় না সরকার আছে। মনে হয় না সরকারের কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ আছে।
তিনি বলেন, আমি নিজেও বাজারে যাই। এসময় নিজ এলাকায় লোডশেডিং নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমার এলাকায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে, বাকি ১৮ ঘণ্টা থাকে না। ‘জিয়ার সঙ্গে এরশাদের অবৈধ সরকার’ এই যে কথাটা, একসঙ্গে, এটা ঠিক না। ১৯৮৬-১৯৯০ সাল পর্যন্ত এরশাদের সরকারকে হাইকোর্ট বৈধ সরকার হিসেবে রায় দিয়েছে।
বিএনপির সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, নিঃসন্দেহে সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। জনগণ চরম দুর্বিষহ যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। টিসিবির পণ্য ন্যায্যমূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এখানে সব থেকে উদ্বেগের সরকারি কর্মকর্তারা এখন এ কাজে ব্যস্ত। জেলা, উপজেলায় ডিলার আছে। এখন গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র, প্রশাসন যন্ত্র প্যাকেজিং কাজে লিপ্ত হয়েছে, জনগণ সেবা পাচ্ছে না। উপজেলা, জেলা প্রশাসন এই কাজে লিপ্ত। সেখানে গত এক মাস যাবৎ জেলা প্রশাসকরা প্যাকেট করছে দুই কেজি তেল, দুই কেজি ডাল, দুই কেজি চিনি এবং বাধ্য করা হচ্ছে গরিব মানুষকে প্যাকেজ নিতেই হবে। ছোলা, খেজুর রিকশাওয়ালা, দিনমজুরের প্রয়োজন নেই, তবুও প্যাকেজ নিতে বাধ্য করছে।
হারুন বলেন, কোনো অবস্থাতেই সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। নির্মাণ সামগ্রী গত কয়েক মাসে সম্পূর্ণভাবে স্থবির। রডের কেজি ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা, সিমেন্টের বস্তা ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, বালুর দাম বেশি, ইটের দাম বেশি, সব কিছুর দাম বেশি। যে কারণে সারাদেশে স্কুল-কলেজের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সরকারকে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিতে হবে।