রমজানে আসুক স্বস্তি

5

ভোগ্যপণ্যের আমদানিকারক, সরবরাহকারী, মজুদদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান এবং কিছু ব্যবস্থা নেয়ার কারণে বাজারে ইতোমধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ভ্যাট ও কর প্রত্যাহার অথবা হ্রাস করা হয়েছে ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলার ওপর থেকে। রমজানের আগে আমদানিকৃত বিদেশী ফলের ওপর থেকে কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানেও অন্তত তটস্থ ও সতর্ক হয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। তারা আপাতত পণ্য মজুদ না রেখে ছেড়ে দিচ্ছে বাজারে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তদুপরি টিসিবির মাধ্যমে কমপক্ষে ৬টি নিত্যপণ্য দুই ধাপে ১ কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে ভর্তুকি মূল্যে। এর পাশাপাশি ওএমএস-এর মাধ্যমে সারাদেশে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে চাল ও আটা। এরও প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। গ্রীষ্মকালীন সবজি যেমন- ঢেঁড়স, পটোল, বরবটি, করল্লা, পেঁপে বাজারে আসার প্রভাব পড়েছে অন্যান্য সবজির দামের ওপর। তবে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের দাম এখনও চড়া। আশার কথা এই যে, রমজানকে সামনে রেখে চাহিদার তুলনায় বিপুল পরিমাণে পণ্য আমদানি হয়েছে। মজুদও যথেষ্ট এবং আশাব্যঞ্জক। আগামীতে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই প্রত্যাশা।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। যে কোন মূল্যে বাজারদর নিয়ন্ত্রণসহ সাধারণ মানুষের নাগালে রাখার জন্য মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানো এবং অবৈধ মজুদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে নিয়মিত তদারকি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কয়েকটি বড় ভোজ্যতেল কারখানা ও দোকান পরিদর্শনসহ তাৎক্ষণিক জরিমানা এবং অনিয়মের অভিযোগে বিক্রয়কেন্দ্রগুলো সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের দাম না বাড়ে, সে জন্য যথাযথ উদ্যোগ নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও ট্যারিফ কমিশনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ এবং পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণে নিয়মিত বাজার তদারকি বাড়ানোসহ মনিটরিংয়ের ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। রমজানে বিশেষ করে পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল, চাল, ডাল, আটা, চিনি, ছোলা, খেজুর, মুরগি, মাছ ও তরল দুধ, ফলমূল বেশি ব্যবহৃত হয়। এমন সব নিত্যপণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ ও সরবরাহের ব্যাপারে জোর দেয়া হয়েছে। এ সময় কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ও মজুদদার সুযোগ নিয়ে থাকেন, যা কাম্য নয় কোন অবস্থাতেই। সরকার বাজার ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। তবে শুধু রমজান নয়, সারা বছর যেন নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে ক্রেতাস্বার্থ সংরক্ষণে।