জগন্নাথপুরে সমিল, কাঠ ও ফার্ণিচার ব্যবসায়ীদের দুর্দিন

15

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে দেশের নামকরা বিভিন্ন কোম্পানীর তৈরি ও স্টিলের ফার্ণিচার বাজার দখল করে নিয়েছে। যে কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে সমিল, কাঠ ও ফার্ণিচার ব্যবসায়ীদের দুর্দিন চলছে। এর মধ্যে অনেকে লোকসান গুণতে গুণতে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। বাকিরা নিজেদের দীর্ঘদিনের সুনাম ধরে রাখতে গিয়ে কোন রকমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিযোগিতার বাজারে ঠিকে থাকতে গিয়ে স্থানীয় কমদামি কাঠ মালের কদর বেড়েছে। আগের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে সেগুন, চামল সহ দামি গাছের গোল বা কাঠ আমদানি করা হয় না। কারণ অধিকাংশ ক্রেতারা এখন আর দামি ফার্ণিচার কিনতে চান না। ক্রেতারা এখন বিভিন্ন কোম্পানীর তৈরি করা ও স্টিলের ফার্ণিচারের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। তাই প্রতিযোগিতার বাজারে ঠিকে থাকতে গিয়ে কমদামি কাঠ মাল দিয়ে ফার্ণিচার বানানো হয়ে থাকে।
সরেজমিনে জগন্নাথপুর পৌর শহরের নামকরা লাকি সমিলের মালিক মনোরঞ্জন চন্দ সবুজ সহ অনেক সমিল ব্যবসায়ীরা জানান, সমিল ব্যবসায়ী, কাঠ ব্যবসায়ী, ফার্ণিচার ব্যবসায়ী ও গাছ সংগ্রহকারী ব্যবসায়ীরা এক সুতায় গাঁথা। এক সময় জগন্নাথপুরে ব্যবসা ভালো ছিল। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হতো সেগুন, চামল সহ দামি গাছের গোল বা কাঠ। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে বাজার দখলে নিয়েছে বিভিন্ন কোম্পানীর তৈরি করা ফার্ণিচার। এর পর থেকে আমাদের ব্যবসার দুর্দিন চলছে। তারা আরো জানান, জগন্নাথপুর উপজেলায় প্রায় ১৫ থেকে ২০টি সমিল আছে। এর মধ্যে কয়েকটি সমিল লোকসান গুণতে গুণতে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা কোন রকমে ঠিকে আছি। প্রতিযোগিতার বাজারে ঠিকে থাকতে গিয়ে স্থানীয় আম, কদম, রেন্ট্রি সহ বিভিন্ন কমদামি কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন আর জগন্নাথপুরে সেগুন সহ দামি কাঠ আমদানি করা হয় না।
কাঠ ব্যবসায়ী শ্রীবাস দাস সহ অনেকে জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে কাঠের ব্যবসা একেবারেই মন্দা হয়ে গেছে। দামি কাঠ আমদানি করা তো দুরের কথা, কমদামি কাঠই বিক্রি হচ্ছে না। এখন শুধু দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সুনাম ধরে রাখতে কোন রকমে ব্যবসা করছি।
ফার্ণিচার ব্যবসায়ী হেলিম মিয়া সহ অনেকে জানান, এখন রেডি মালে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। তাদের সাথে ঠিকে থাকতে গিয়ে বাধ্য হয়ে কমদামি কাঠ দিয়ে ফার্ণিচার বানাতে হচ্ছে। গাছ ব্যবসায়ী আবদুল মুকিত সহ অনেকে বলেন, আমরা বিভিন্ন গ্রামে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গাছ কিনে সমিলে দেই। সমিল থেকে কাঠ বানিয়ে অথবা গোলে বিক্রি করা হয়। তারা আরো জানান, এখন বিদেশি দামি গাছ বা কাঠ আনার প্রয়োজন নেই। কারণ স্থানীয় গাছের দাম অনেক বেড়ে গেছে। এক সময় যে গাছ দিয়ে মানুষ লাকড়ি বানাতো, এখন সেই গাছ দিয়ে কাঠ হচ্ছে।