কাজিরবাজার ডেস্ক :
মালয়েশিয়ায় বাড়ছে তেলের দাম। রান্নার তেলের দাম বৃদ্ধি মাসিক খাদ্য সূচককে রেকর্ডে ঠেলে দিতে পারে। সম্প্রতি সারের দাম বাড়ায় খাদ্যের দামও বাড়তে পারে। শীর্ষ উৎপাদক ইন্দোনেশিয়ায় চালান বিধিনিষেধ ও বাগানে দীর্ঘস্থায়ী শ্রমিক ঘাটতির কারণে মালয়েশিয়ায় তেলের দাম বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দেশটির বিভিন্ন সুপার মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, পাম তেল প্রতি লিটার (প্যাকেট) বিক্রি হচ্ছে আড়াই রিঙ্গিত, যা বাংলাদেশি ৫৩ টাকা ৭৫ পয়সা। প্রতি লিটার বোতল বিক্রি হয়েছে ৬.৭০ রিঙ্গিত। পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ২৯.৭০ রিঙ্গিতে।
অন্যদিকে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। বিজনেস রেকর্ডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মে মাসে সরবরাহের জন্য বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জ অনুসারে পাম অয়েলের বাজার আদর্শ ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি টন ছয় হাজার ৬০২ রিঙ্গিত (এক হাজার ৫৮১ ডলার ৩২ সেন্ট)।
চলতি বছর শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় উৎপাদনের হার বেড়েছে ৩ শতাংশ। তবে বৈশ্বিক চাহিদা মেটানোর জন্য এটি যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মুম্বাইভিত্তিক ভোজ্যতেলের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সানবিন গ্রুপের রিসার্চ হেড অনিলকুমার বাগানি বলেন, দক্ষিণ আমেরিকা ও কানাডায় সয়াবিন ও র্যাপসিডের উৎপাদন কমায় অয়েলসিডের বাজারে বেশ প্রতিকূল পরিস্থিতি। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ফলে সূর্যমুখী তেলের রপ্তানি অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ প্রায় দুই লাখ টন কমেছে। ফলে অঞ্চলটি ভোজ্যতেলের সংকটে ভুগছে। এদিকে ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ মালয়েশিয়ায় পাম অয়েল মজুতের পরিমাণ জানুয়ারির তুলনায় কমেছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ।
চলতি মাসে দেশটিতে পাম অয়েল মজুতের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৮০ হাজার টন, যা ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বুধবার (৯ মার্চ) ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারের মাসিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী সরবরাহের জন্য নিম্ন ভবিষ্যদ্বাণীতে এটি ভালোভাবে প্রতিফলিত হতে পারে।
ব্যয়বহুল উদ্ভিজ্জ তেল ও দুগ্ধজাত খাবারের কারণে জাতিসংঘের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য খরচ রেকর্ডের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রান্নার তেলের দাম বৃদ্ধি মাসিক খাদ্য সূচককে রেকর্ডে ঠেলে দিতে পারে। উচ্চশক্তির বাজারের কারণে সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যের দামও বাড়িয়ে দিতে পারে।