ধর্মের নামে রাজনীতি

12

বাংলাদেশে ধর্মের নামে রাজনীতি আবারও নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে ৩০-৩১ জানুয়ারি প্রতিবছর মিরপুর মুক্ত দিবস পালন করে সংগঠনটি এ দিনে শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরের পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী, রাজকার, আলবদর, আলশামসের কিছু সদস্য অবাঙালি অধ্যুষিত মিরপুরে অবস্থান গ্রহণ করে। এসব কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরোধীদের কবল থেকে মিরপুর মুক্ত করতে সশস্ত্র যুদ্ধে নিহত হন শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা, যাদের মধ্যে রয়েছেন বিখ্যাত চিত্রপরিচালক জহির রায়হানসহ অনেকে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দ্রুততম সময়ে প্রণীত জাতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংযুক্ত করে ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। শুরু করেছিলেন রাজাকার আলবদরসহ স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর বিচার। দুঃর্ভাগ্যের বিষয়, ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে সব বন্ধ করে দেয়। শুরু হয় ’৭১-এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। যার ভিত্তিতে শুরু হয় রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার, জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ। নির্মূল কমিটির দাবি, যা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত ও সমর্থনযোগ্য, ধর্মের নামে রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে দেশে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত হবে না।
ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারা বিষধর সাপ। বিষধর সাপ ফণা তুলবেই। ছোবল মারাই তার স্বভাব। একুশ বছর পর আবারও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সরকার গঠনের সুযোগ পেলে কিছুদিন বিষধর সাপেরা গর্তে লুকোয়। পরে গণতন্ত্রের খোলা হাওয়ার ভেতর সুযোগ বুঝে ফের আবির্ভূত হয় দানবরূপে। বর্তমানকালে তাদের স্পর্ধা সীমা ছাড়িয়ে যেতে বসেছে। আবারও তারা সাম্প্রদয়িকতার বিষবাষ্প ছড়াতে শুরু করেছে। এই অপশক্তি দেশে বিভেদ তৈরির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে নৈরাজ্য কায়েম করতে চাইছে। তাই এদের সর্বশক্তি দিয়ে রুখতে হবে এখনই। দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত্র গ্রহণের সময় এসেছে। চিহ্নিত ও স্বঘোষিত মৌলবাদী জঙ্গি ধর্মীয় অপশক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের এখনই উপযুক্ত সময়।