বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে দেশের প্রতিটি মানুষ। আর সেজন্যই সরকার আবারও নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করছে। সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাষার মাসের প্রথম দিন শুরু হচ্ছে না বইমেলা। ওমিক্রনের লাগাম টেনে ধরতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে পাঁচ দফা। অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি সমাগম নয় এমন ঘোষণাও দেয়া হয়েছে বাধ্য হয়েই।
উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশের অবস্থা নাজুক। এখনও টিকার আওতায় আনা যায়নি মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। প্রায় কোথাও স্বাস্থ্য বিধির বালাই নেই। বিয়ে, পিকনিক, পর্যটন, পুনর্মিলনীসহ সব সামাজিক অনুষ্ঠান চলছে বিরামহীনভাবে। গ্রামের কথা বাদ দিলেও শহরগুলোতে বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক পরছে না। ওমিক্রন যে গতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে আগামী দিনগুলোর অবস্থা কল্পনা করলেও ভীত হতে হয়।
করোনাভাইরাসের মতো সংক্রামক ও হন্তারক ব্যাধির ক্ষেত্রে বারবার বলা হয়েছে আতঙ্কিত হবেন না, সতর্ক ও সচেতন থাকুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলেছে। এই প্রবণতা ভয়ঙ্কর। করোনা প্রতিরোধে মাস্ক পরা এবং একে অপর থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। কুড়ি সেকেন্ড ধরে দুই হাত সাবান দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে। এর অন্যথা হলে অবস্থা হবে ভয়ঙ্কর। নিজের ও পরিবারের কল্যাণ চাইলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালনের বিকল্প নেই। অনেকে দুই ডোজ টিকা নিয়েই মুখের মাস্ক খুলে ফেলেছেন। ঘন ঘন সাবান দিয়ে আর হাত ধুচ্ছেন না। হয়ত জানেন না যে, দুবার টিকা নেয়ার পরও আক্রান্ত হতে পারেন তিনি। আগে থেকে কেউ অসংক্রামক জটিল রোগে ভুগে থাকলে সেই পুরনো রোগই তার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবে। বলা হচ্ছে, দুই ডোজ টিকা নেয়ার পর আক্রান্ত হলে জটিলতা হবে না, মৃত্যুঝুঁকি থাকবে না। করোনাভাইরাস কিন্তু বহুরূপী! সে বারবার তার রূপ বদলাচ্ছে, শক্তি বাড়াচ্ছে। তাই দুই ডোজ টিকা গ্রহণ এবং একবার করোনায় ভোগার পরও আক্রান্ত হতে পারি আমরা। এমন একটি ধরন আমাদের আক্রমণ করতে পারে, যার থেকে শতভাগ সুরক্ষা পাওয়ার এ্যান্টিবডি মানবদেহে নেই। তাই ঠিক কতখানি জটিলতায় পড়বে মানুষ তা বলে দেবে কে? তাই সতর্ক থাকাটাই উত্তম। আমরাও বলি, সবাই স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলুন।