স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর সম্পদ দখলের চেষ্টা করছে একটি পক্ষ। এ জন্য জালজালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করছে এবং বাধা দেওয়ায় হামলা, মামলা ও হত্যার হুমকি দিচ্ছে তারা।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন, জগন্নাথপুর থানার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের আহমদাবাদ গ্রামের তছর উদ্দিনের ছেলে মো. আফাজ চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আহমদাবাদ কুবাজপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত নূর মিয়া চৌধুরীর ছেলে শাহ সুবা চৌধুরী, শাহ শাহব চৌধুরী, মৃত শাহ নেওয়াজ চৌধুরী, মৃত শাহ কুতুব চৌধুরী ও শাহ ইদুজ্জোহা চৌধুরী তারা সকলেই আমার চাচাতো ভাই। তারা প্রবাসে থাকায় সম্পত্তি দেখাশোনার জন্য আমাকে কেয়ারটেকার হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। সেই সুবাদে আমি তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দেখাশুনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘চাচাতো ভাই শাহ নেওয়াজ চৌধুরীর মৃত্যুর পর স্ত্রী সুহেনা চৌধুরী অন্য ভাইদের সহায়সম্পত্তি দখলের নানা অপকৌশল হাতে নিয়েছেন। এ জন্য তার ভাই রিজু মিয়া ও ভাইয়ের স্ত্রী সুমি বেগমসহ বেশকিছু লোক নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস শুরু করেছেন। সবাই মিলে চক্রান্তের মাধ্যমে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছেন।’
আফাজ চৌধুরী বলেন, ‘গত ২২ আগস্ট আমার চাচাতো ভাই মৃত শাহ নেওয়াজ চৌধুরীর স্ত্রী সুহেনা চৌধুরী ঘরে থাকা আমার চাচাতো ভাই শুভা চৌধুরী গংদের জায়গা সম্পত্তির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ করে অজ্ঞাতস্থানে চলে যান। ঘরের দরজা ভাঙা দেখে রাতের পাহাদার বিষয়টি আমাকে অবগত করেন। স্থানীয় মেম্বারসহ প্রবাসী ভাইদের বিষয়টি অবগত করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা নানা হুমকি দেয়।’
এ ঘটনায় সুহেনা চৌধুরী, তার ভাই রিজু মিয়া ও তার স্ত্রী সুমি বেগমকে আসামী করে ২৯ আগস্ট জগন্নাথপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় সিনিয়র জুডিসিয়াল আমলি-১ আদালতে সুহেনা গংদের বিরুদ্ধে ৮০/২০২৪ মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে।
শুবা চৌধুরী গংদের কৃষি জমিও দখলের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন কেয়ারটেকার আফাজ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এরই অংশ হিসেবে বাড়িতে বসবাসকারী কৃষক মো. নূর হাকিম ও তার পরিবারকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। প্রায় সময় তারা নূর হাকিমকে অত্যাচার করেন এবং হুমকি প্রদান করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছরে বন্যার কারণে নূর হাকিমের বসতঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করলে তিনি অন্যত্র আশ্রয় নেন। কিন্তু ফিরে এসে তার কষ্টার্জিত ৩৫ মন শুকনো ধান ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল পাননি। সুহেনা চৌধুরী ও তার ভাইয়ের স্ত্রীসহ কয়েক জন মিলে ২৩ জুন সন্ধ্যা সাতটার দিকে তালা ভেঙে ধান চুরি করেন।’ এ বিষয়ে জানতে চাওয়ায় ২৬ জুন নূর হাকিমকে মারধর ও তার স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ করেন আফাজ। এ ঘটনায় ২ জুলাই মো. নূর হাকিম বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুর আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা (সিআর মোকদ্দমা নং-১২৯/২০২৪) দায়ের করেন। সার্বিক বিষয়ে আফাজ চৌধুরী স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. ইউসুফ আহমদ, জালাল উদ্দিন, আলা মিয়া, এনামুল হক, রাজিব চৌধুরী, রাহিম চৌধুরী, সাফর আলী, নূর হাকিম প্রমুখ।