আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

3
ভিসি পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছে। ছবি- মামুন হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার ১৯ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেনতারা। ২৪ জন শিক্ষার্থী এ অনশনে অংশ নেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন ছাত্র এবং ৯ জন ছাত্রী রয়েছেন।
অনশনে যাওয়া ছাত্র আব্দুল্লাহ আল গালিব বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো আমাদের ওপর হামলা চালাতে পারে এমন উপাচার্য যাতে আর না থাকে, তাই আমি অনশনে যাচ্ছি। যতদিন এ উপাচার্য পদত্যাগ না করবে, ততদিন আমরন অনশন করে যাব।
আরেক শিক্ষার্থী মিথিলা বলেন, সামান্য দাবি নিয়ে আমরা প্রভোস্টের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সমস্যার সমাধান না করে ছাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। পরে আমরা উপাচার্যের কাছে গেলে তিনি আমাদের দাবি না মেনে উল্টো অনেক দিন সময় চায়। পরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। তাই আমরা এ হামলার প্রতিবাদে উপাচার্যের পদত্যাগে আমার আমরন অনশন শুরু করছি।
অনশনে যাওয়া শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, বুধবার ১২টার মধ্যে শাবিপ্রবির উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করায় আমরা আমরণ অনশন শুরু করেছি। পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আমরা মুখে কোনো অন্ন নেব না।
জানা যায়, শাবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্টের অসদাচরণের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই হলের ছাত্রীদের মাধ্যমে সূচিত হয় আন্দোলন। গত শনিবার আন্দোলনরতদের ওপর ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এতে নতুন মাত্রা পায় আন্দোলন। হলের প্রভোস্টের অপসারণ, অব্যবস্থপনা দূর, ছাত্রলীগের হামলার বিচার চেয়ে পরদিন রবিবার সকল শিক্ষার্থী আন্দোলনে সামিল হন। সেদিন উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। তাকে মুক্ত করতে অ্যাকশনে যায় পুলিশ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাঁধে সংঘর্ষ। এতে শিক্ষার্থীসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। পরে উত্তুঙ্গে ওঠে আন্দোলন।
এদিকে, গত রবিবার পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের ঘটনায় দুই থেকে তিনশ’ অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলার এজাহারে পুলিশ লিখেছে, সেদিন শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর গুলিও ছুঁড়েছিল। এ মামলা প্রত্যাহারে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দিনভর উত্তপ্ত ছিল শাবি ক্যাম্পাস। সকাল থেকে ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণ, প্রক্টর ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগানে দিনভর মুখর ছিল ক্যাম্পাস। এ সময় কিছু সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়।