স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেসামাল রূপ ধারণ করেছে। এখন প্রতিদিন শতাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছেন। চলতি মাসের ১৬ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫৯ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় করোনাক্রান্ত ১৬৩ জন শনাক্ত হয়েছেন। অথচ গেল ডিসেম্বর মাসে মাত্র ১০৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে সিলেটে করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ছে। মাস্ক না পরা, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা, ওমিক্রনের ছড়িয়ে পড়াসহ বিভিন্ন কারণে এই সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১ তারিখ সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে, ১৬ দিনে সিলেট বিভাগে করোনাক্রান্ত ৭৫৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্তের সংখ্যা এখন প্রতিদিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৯৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত করা হয় ১৬৩ জনকে। শনাক্তের হার ১৬.৩৩! যা গত প্রায় পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। শনাক্তকৃতদের মধ্যে ১২১ জন সিলেট জেলার। বাকিদের মধ্যে রয়েছেন সুনামগঞ্জের ৮ জন, মৌলভীবাজারের ২৬ জন ও হবিগঞ্জের ৮ জন। সবমিলিয়ে বিভাগে করোনাক্রান্তের সংখ্যা এখন ৫৫ হাজার ৮৫৫ জন। তন্মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন ৫০ হাজার ১৭৪ জন। মারা গেছেন ১ হাজার ১৮৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় চার মাস সিলেট বিভাগে করোনার সংক্রমণ ছিল নিয়ন্ত্রণে। এ সময়ে বেশ কয়েকদিন গেছে, যেদিন কোনো রোগীই শনাক্ত হননি নমুনা পরীক্ষায়। শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসেই অন্তত ৫দিন কোনো রোগী শনাক্ত হননি। কিন্তু পরিস্থিতি এখন বদলাতে শুরু করেছে। প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণের হার।
এদিকে, বর্তমানে সিলেটজুড়ে জ্বর, সর্দির প্রকোপ বাড়ছে। কিন্তু জ্বর-সর্দিতে ভোগা সিংহভাগ মানুষেই করোনার পরীক্ষা করাচ্ছেন না। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে সংক্রমণের হার অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, করোনার সংক্রমণ বিশ্বজুড়েই বেড়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতিও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সিলেটে বেশ কিছুদিন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখন আবার বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সবার সচেতনতা প্রয়োজন। বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অযথা বাইরে ঘোরাফেরা করা যাবে না, যতোটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। তিনি বলেন, এখন টিকার সংকট নেই। সবাইকে টিকা গ্রহণ করতে হবে। টিকা নিয়ে অযথা ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।