স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আজ শপথের দিন ॥ বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপনে বর্ণাঢ্য ও জমকালো আয়োজন

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
‘সে এক বিষম জানকবুল জনযুদ্ধ/ ওরা প্রাণপণ যুদ্ধ করেছিল/ ওরা কিন্তু বিজয় দেখে যেতে পারেনি!/…যারা বিজয় দেখে যায়নি/ যাদের জীবনে বিজয় বলে কিছু আসেনি/ যারা এ বাংলার জন্য যুদ্ধ করেছিল/ জয়বাংলা বলে/ তাদেরকে এসো আমরা স্মরণ করি/ এই বিজয় দিবসে।’
প্রয়াত সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তার লেখা ‘এই স্মরণ-দিবসে’ কবিতায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এভাবেই আহ্বান জানিয়েছেন কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতিকে।
আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রক্তনদী পেরিয়ে জন্ম নেয়া আমাদের প্রিয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের বিজয়ের আজ ৫০ বছর পূর্তির দিন। আনন্দ-বেদনায় মিশ্র মহান বিজয় দিবস আজ, মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। বিজয়ের অর্ধশত বার্ষিকী তথা সুবর্ণজয়ন্তীর অপার আনন্দে আজ বাংলাদেশের সবাই উদ্বেলিত। কোন দেনদরবার নয়, কারও দয়ার দানে নয়, সাগর-সমান রক্তের দামে বাংলাদেশ অর্জন করেছে স্বাধীনতা, রক্ত-সাগর পেরিয়ে বাঙালি জাতি পৌঁছেছে তার বিজয়ের সোনালি তোরণে। আর বাংলাদেশের এই মহাবিজয়ের মহানায়ক হচ্ছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিজয়ের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ।
যে কোন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য এই শুভক্ষণ ভাগাভাগির এক সুবর্ণ সুযোগ। যাঁরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ও নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে জীবনকে বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন- তাঁদের জন্য, তাঁদের পরিবারের জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যাঁরা কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, তাঁদের জন্য এই দিনটি অসম্ভব ভালোলাগার একটি দিন। আজকের দিনটিতে বাঙালি জাতি বিজয়ের ৫০ বছর পূর্ণ করছে। তাই আজ দেশের ষোল কোটি কৃতজ্ঞ বাঙালি হাতে লাখো শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শপথ নেবেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের।
আজ সেই বিজয়ের গৌরবের বাঁধভাঙ্গা আনন্দের দিন। একই সঙ্গে লাখো স্বজন হারানোর শোকে ব্যথাতুর-বিহ্বল হওয়ারও দিন। তীব্র শোষণের কুহেলী জাল ভেদ করে ঠিক ৫০ বছর আগে একাত্তরের এই দিনটিতে প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকিমিকিয়ে উঠেছিল বাংলার শিশির ভেজা মাটি, অবসান হয়েছিল পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরের নির্বিচার শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়। নয় মাসের জঠর-যন্ত্রণা শেষে এদিন জন্ম নেয় একটি নতুন দেশÑ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ঝড়ের ভেতরে বিকশিত অটল বৃক্ষের জীবন্ত প্রতীক স্বাধীনতা নামের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ আজও প্রচন্ড ঝাঁকি দেয় রক্তে, শাণিত করে চেতনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। সেই বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির দিন আজ।
বাঙালি আঘাত খেয়েছে বার বার, কিন্তু কখনও আহত পাখির মতো আর্তনাদ করেনি, ভেঙ্গে পড়েনি ব্যর্থতার ক্রন্দনে। সমস্ত আঘাত সে বুক পেতে নিয়েছে, সর্বাঙ্গ রুধির মেখে অবিচারের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। সেই ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, সেটির উদয় ঘটে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে। বহু শতাব্দীর স্বপ্ন-স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে। অবর্ণনীয় দুর্যোগে লন্ডভন্ড হওয়া বাংলাদেশের বঞ্চিত ও শোষিত মানুষ রুখে দাঁড়ায় সর্বশক্তি দিয়ে। আত্মবিস্মৃত বাঙালি আত্মপরিচয় অনুসন্ধানে উৎসর্গ করে নিজ ও স্বজনকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৪ বছরের লড়াই-সংগ্রাম এবং তাঁর নেতৃত্বে-নির্দেশে বাঙালি জাতির এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে বিজয়, লাল-সবুজ পতাকা সংবলিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ, বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে।
পূর্বাচলে আজ উদিত যে সূর্য প্রতিদিনের হয়েও সে প্রতিদিনের নয়, তার রক্তিমতায় তিরিশ লাখ শহীদের রক্ত আমাদের মনে পড়বে, আকাশ যে কোমলতায় আজ উদ্ভাসিত, একাত্তরের সম্ভ্রমহারা দশ লাখ মা-বোন-জায়ার ক্রন্দনধোয়া সে উদ্ভাস। ভোরের যে রাঙা আলোটি আজ স্পর্শ করেছে ভূমি, স্বদেশের সেই পবিত্র ভূমি ভিজে আছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর রক্তে, আর সেই রক্তস্রোতে মিশে আছে জাতীয় চার নেতার উষ্ণ শোণিত।
৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই সবুজ দেশে ৫০ বছর আগে আজকের এই দিনে উদয় হয়েছিল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সূর্য। সেদিনের সেই সূর্যের আলোয় ছিল নতুন দিনের স্বপ্ন, যে স্বপ্ন অকাতরে প্রাণ দিয়েছিল এ দেশের ৩০ লাখ মানুষ। ৫০ বছর পূর্ণ হলেও সেই স্বপ্ন এখনও পুরোপুরি বাস্তবে রূপ পায়নি, শেষ হয়নি মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রাম। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর কুয়াশায় জড়ানো হালকা শীতের বিকেলে রমনার রেসকোর্স ময়দানে দাম্ভিক পাকিস্তানী সেনারা যে অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে বাঙালির বুকে, হাতের সেই অস্ত্র পায়ের কাছে নামিয়ে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর নেতাদের সামনে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশজুড়ে চলমান ‘মুজিববর্ষ’-এর মধ্যেই এসেছে বাঙালীর বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনটিকে সামনে রেখে এবারের বিজয় দিবস বিশেষ তাৎপর্য বয়ে এনেছে পুরো জাতির জীবনে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা মাঝে মধ্যেই ফোনা তোলার চেষ্টা করছে। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করার ফেলার মতো ঔদ্ধত্য ও স্পর্ধা দেখাচ্ছে। তাই পাকিস্তান ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে এক অন্যরকম গণজাগরণ ও আবহে এবার বিজয় দিবস পালন করছে গোটা জাতি। এবারের বিজয় দিবস মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মৌলবাদ, জঙ্গিবাদের মিলনস্থল বিএনপিসহ উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে আবারও পরাজিত করে রাজাকার-জঙ্গিমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃপ্ত শপথে বলীয়ান হচ্ছে দেশের মানুষ।
বর্ণাঢ্য ও জমকালো আয়োজন : এবার যে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের ৫০ বছর, সুবর্ণজয়ন্তী। তাই করোনার মধ্যেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ণাঢ্য ও জমকালো আয়োজনে বাঙালি জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করবে মহান বিজয় দিবস, বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। এ উপলক্ষে পুরো রাজধানী সেজেছে এক অন্যরকম সাজে, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংবলিত ডিজিটাল প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, পতাকা দিয়ে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে আজ বৃহস্পতিবার থেকে দুই দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এ আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন আজ অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে চারটায়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পরিচালনায় সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শপথ। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় পতাকা হাতে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের এই বর্ণাঢ্য ও জমকালো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। শপথ গ্রহণ শেষে আলোচনা পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সম্মানীয় অতিথির বক্তব্য রাখবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং স্বাগত বক্তব্য রাখবেন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা সম্মানীয় অতিথিকে ‘মুজিব চিরন্তন’ শ্রদ্ধাস্মারক প্রদান করবেন। এরপর অনুষ্ঠিত হবে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জাতীয় পর্যায়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশে কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত সদস্যগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমভিত্তিক যান্ত্রিক বহর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিবদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
দিনটি সরকারী ছুটির দিন। সকল সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারী ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গ সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আজ সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। দিবসটি উপলক্ষে ইলেকট্টনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- সূর্যোদয় ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সকাল ১১টায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একটি প্রতিনিধি দল টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া আগামী শনিবার মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ধানম-ি বত্রিশ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত বর্ণাঢ্য বিজয় শোভযাত্রা বের করবে আওয়ামী লীগ।
প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ : এদিকে, সাভার থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিনিধি অঙ্গন সাহা জানান, অতিথিদের বরণ করতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ। আজ মহান বিজয় ও জাতীয় দিবসের সূচনা লগ্নে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ ভরে উঠবে ফুলে ফুলে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনে শেষ হয়েছে তিন বাহিনীর ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানের মহড়া। এখানে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোসহ সকল প্রস্তুতি করা হয়েছে সম্পন্ন। এদিন নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য। এ দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে রং-তুলির পাশাপাশি ফুলে ফুলে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সশস্ত্র সালামের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের সূচনা শুরু হবে। শ্রদ্ধা জানাতে আসা প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের যাতায়াত ও অবস্থানের নির্দেশনার কাজও শেষ। স্মৃতিসৌধের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকদিন আগে থেকেই জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নিষেধ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।