কাজিরবাজার ডেস্ক :
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিয়োগ বানিজ্যের’ তদন্তে এবারে মাঠে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। গতকাল মঙ্গলবার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের কমিটি সরজমিনে তদন্ত শুরু করেছে।
সকাল থেকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা নগরী চৌহাট্টা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী কার্যালয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন। তদন্ত কাজ শেষে আজকেই তাদের ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। সরেজমিনে এসে তদন্ত শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
তবে তদন্তের ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্তাধিন বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। নিয়োগের ব্যাপারে যে অভিযোগগুলো উঠেছে সেগুলো আমরা যাছাইবাছাই করে দেখছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে কোন সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
এই তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান ও কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মৌলি আজাদ।
২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আগেই অ্যাডহক ভিত্তিতে ১৭২ জন নিয়োগ প্রদান করা হয়। এই বিপুলসংখ্যক জনবলের বসার জায়গাও নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে। নেই তেমন কোনো কার্যক্রমও। অর্থের বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত নামে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পর এবার তদন্তে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
অভিযোগ তদন্তে গত ২৮ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্ব ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত ১ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কমিটি সরজমিনে তদন্তের অংশ হিসেবে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শণ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন। এবারে ইউজিসির তদন্ত কমিটি সরজমিনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শণ ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য দেন।
২০১৮ সালের দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরুর পর ওই বছরের ১৪ নভেম্বর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ) নঈমুল হক চৌধুরী। বর্তমানে নগরীর চৌহাট্টায় অস্থায়ী কার্যালয়ে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দক্ষিণ সুরমায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি অধিগ্রহণ হলেও সেখানে জমি ও অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন হয়নি। অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগের কথা স্বীকার করে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘জরুরি প্রয়োজন মেটাতে অ্যাডহক ভিত্তিতে শখানেক লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বেশির ভাগই কর্মচারী পদে নিয়োগ পেয়েছেন। যথাযথ নিয়ম মেনেই তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।