৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি লেডি বাইকার রিয়া

12

স্টাফ রিপোর্টার :
লাপাত্তা রিয়া রায় (২২)। ৫দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। রিয়া রায় নিজেকে নগরীর ফাস্ট লেডি বাইকার হিসেবে দাবি করেন। মাথায় হেলমেট, চোখে রঙ্গিন চশমা পরে বিলাসবহুল মোটরবাইক নিয়ে নগরীর অলিগলিসহ রাজপথে দেখা মিলতো তাঁর। এ লেডি বাইকার খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পান। ইতোমধ্যে বিভিন্ন হেলমেট-পার্টস কোম্পানিসহ বিলাসবহুল মোটরসাইকেল ‘ইয়ামা’ কোম্পানির বিজ্ঞাপনেও লেডি বাইকার রিয়া রায়-কে দেখা গেছে।
এদিকে হঠাৎ আলোচিত এই লেডি বাইকারকে হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। নেপথ্যে রয়েছে মাদক নেটওয়ার্ক। রবিবার সিলেটের এয়ারপোর্ট এলাকায় প্রাইভেটকার থেকে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় লেডি বাইকার রিয়া রায়কে খুঁজছে পুলিশ। ইতোমধ্যে সোমবার মাদকসহ রিয়ার প্রেমিক আরমান সামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় সামির সাথে রিয়া থাকলেও সে সুকৌশলে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে রিয়া লাপাত্তা রয়েছে। এ ঘটনার পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও লেডি বাইকার রিয়ার খোঁজ পাওয়নি পুলিশ। মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোববার রাতে আমাদের কাছে একটি গোপন তথ্য আসে নীল রঙের একটি বাইকে মাদক বহন হচ্ছে। তখন আমাদের চোখে পড়ে একটি ছেলে ও মেয়ে সিলেটের এয়ারপোর্ট-সংলগ্ন কয়েকটি রেস্টুরেন্টের সামনে মোটরবাইক (ঢাকা মেট্রো খ ১৪-০৫১২) নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরছিলেন। ব্যাপারটি সন্দেহ হলে গাড়িটি থামানোর সংকেত দেওয়া হয়। একটু দূরে গিয়ে থামে গাড়িটি। তখন গাড়ি থেকে এক তরুণী দ্রুত নেমে চায়ের দোকানগুলোর সামনে থাকা মানুষের সাথে মিশে যায়। তাকে শনাক্ত করা যায়নি। এ সময় পুলিশ গাড়ি তল্লাশি করে মাম পানির বোতলে রাখা বিশেষ মদ ৫০০ মিলিগ্রাম, ইয়াবা ট্যাবলেট ১০ পিস ও দুই পুড়িয়া গাজা উদ্ধার করে। যেহেতু তাদের কাছে তিন ধরণের মাদক পাওয়া গেছে সে ক্ষেত্রে ধারণা করা হচ্ছে তারা মাদকগুলো তরুণ-তরুণিদের কাছে খুচরা বিক্রির জন্য বহন করে থাকতে পারে।
ওসি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরমান সামি জানায়- পালিয়ে যাওয়া তরুণী রিয়া রায়। সে একজন লেডি বাইকার। মাদক মামলায় সামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হলেও লেডি বাইকার রিয়া ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃত আরমান সামি নগরীর মিরাপাড়ার ১৪৯/বি নং বাসার শামসুল ইসলামের ছেলে ও রিয়া রায় নগরীর কুমারপাড়ার মন্দিরগলির ঝর্ণারপাড় এলাকার ৬২/এ-এর বাসিন্দা রামু রায়ের মেয়ে। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ষোলঘর এলাকায়।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিয়াকে নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
পুলিশ বলেছে, বিলাসী জীবন যাপনের পাশাপাশি রিয়া ও সামি মাদকাসক্ত হয়ে একপর্যায়ে তারা দু’জনই মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। লেডি বাইকার রিয়া কৌশলে সিলেটের বিভিন্ন এলাকার তরুণ-তরুণীদের কাছে মাদক বিক্রি করে আসছে।