ই-কমার্স বিষয়ক প্রতিবেদন চূড়ান্ত, মন্ত্রী সভা বিভাগে জমা আজ

4

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে ই-কমার্স খাত কীভাবে পরিচালনা করা যায়, এসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন গ্রহণের প্রক্রিয়া কেমন হবে এবং তাদের লাইসেন্স প্রাপ্তির পদ্ধতি বা যোগ্যতা কী হবে তা নির্ধারণের প্রাথমিক সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার (১০ নভেম্বর) মন্ত্রিসভা বিভাগে এটি জমা দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন পর্যালোচনায় গঠিত সাব-কমিটি। এই কমিটি ডিজিটাল কমার্স আইন প্রণয়ন ও কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার বিষয়েও কাজ করছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, কমিটির তৃতীয় ও শেষ সভায় কেবিনেট ডিভিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সবকিছু বিবেচনায় এনে রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার (১০ নভেম্বর) কেবিনেট ডিভিশনে রিপোর্ট জমা দেওয়ার দিনক্ষণও নির্ধারণ করা হয়েছে। কেবিনেট ডিভিশন থেকে যেসব বিষয় দেখতে বলা হয়েছিল, সেগুলো ফাইনাল করা হয়েছে। কেবিনেটের দেওয়া টিওআর (টার্মস অব রেফারেন্স) অনুযায়ী সেগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। কমিটি ইউনিক বিজনেস আইডি (ইউবিআইডি) করেছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে এর আওতায় আনতেই এটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রিন্টকপি তৈরি করা হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় অ্যাপ তৈরি করতে এটুআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, দেশের অভ্যন্তরে ব্যবসা পরিচালনাকারী শত শত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করেছে দেশের তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা। শনাক্ত করা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর নামসহ তাদের কার্যক্রমের বিস্তারিত প্রতিবেদন পৃথকভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন সমন্বয় করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে ভিন্নতা ছিল। একটি সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৩টি। আরেকটি সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৭টি এবং অপরটির মতে দেশে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৯টি। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসব প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, কারা পরিচালনা করছে তাদের জীবনবৃত্তান্ত এবং ব্যবসায়ের ধরন কেমন তা জানা গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকার গঠিত কমিটি এসব প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে আরও সুনিশ্চিত হয়েছে। এসব অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের লেনদেন, ব্যবসায়িক ধরন বা কৌশল অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। জানা গেছে, তিনটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনেই ৮টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে একই তথ্য পাওয়া গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে এএইচএম সফিকুজ্জামান জানান, সবকিছু কঠোর অনুসন্ধানের মধ্য দিয়েই আমরা অভিযুক্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে চাই। গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। ইভ্যালিসহ যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিটি তালিকায় সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, এসক্রো সার্ভিসে যে টাকা আটকে আছে তার পরিমাণ ২১৪ কোটি। এই টাকা ফেরত দিতে ইতোমধ্যে আমরা জননিরাপত্তা বিভাগ ও সিআইডিকে চিঠি দিয়েছি।
তিনি বলেন, টাকাটা ফ্রিজ করে রেখেছে সিআইডি। যেহেতু মামলা আছে তাই টাকাটা কীভাবে ফেরত দেওয়া যায় এ বিষয়ে সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ একটা গ্রুপ কাজ করেছে। দুই-একদিনের মধ্যে হয়তো লিগ্যাল ওপেনিয়ন পেলে আমরা টাকাটা ছাড় করার ব্যবস্থা করবো। অনেকেই প্রোডাক্ট পেয়ে গেছে, ফলে টাকাটা কিন্তু কোম্পানি পাবে। আর যেখানে ভোক্তা প্রোডাক্ট পায়নি তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দেবো।