২২ অক্টোবর শুক্রবার হোটেল নির্ভানা ইন-এ দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে “সিলেটে বিনিয়োগের সুবিধাবলী” বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, এমপি। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুর্কিশ কো-অপারেশন এন্ড কো-অর্ডিনেশন এজেন্সী’র ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর আহমেদ ফারুক মোস্তাকগ্লু। আরো অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, তুরস্কের অনারারী কনসুল জেনারেল সালাউদ্দিন কাশেম খান। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, তুরস্কের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক যথেষ্ট শক্তিশালী। এ সম্পর্ক আরো বৃদ্ধির জন্য তুরস্কের বর্তমান সরকার যথেষ্ট আগ্রহী। এ ব্যাপারে তুরস্ক দূতাবাস ও আমাদেরকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় বিশ্বাসের মিল থাকায় তুরস্ক বাংলাদেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত সুপরিচিত একটি দেশ। অনেক বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী স্কলারশীপ নিয়ে তুরস্কে লেখাপড়া করতে যান। তিনি বাংলাদেশের জন্য এ স্কলারশীপ বৃদ্ধি করার আহবান জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরো বলেন, তুরস্ক কন্সট্রাকশনের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু বাংলাদেশে তুরস্ক কন্সট্রাকশন সেক্টরে কোন কাজ করে না। তিনি বাংলাদেশের কন্সট্রাকশন সেক্টর, কমিউনিকেশন সেক্টর এবং রিনিউয়েবল এনার্জী সেক্টরে তুরস্কের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, তুরস্ক কৃষি, পর্যটন, স্বাস্থ্য ইত্যাদি খাতে অনেক উন্নত। বাংলাদেশেও এসব খাতে তুরস্ক বিনিয়োগ করতে পারে। বিশেষ করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা নিয়ে তুরস্ক সিলেটে একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল স্থাপন করতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিপরীতে রিটার্ন অনেক বেশী হয়ে থাকে, তাই তুরস্কের বিনিয়োগকারীরা এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।
সভায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান বলেন, বাংলাদেশ আমাদের কাছে ভাতৃপ্রতিম। আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতি একই রকম। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতুর্তুককে নিয়ে কবিতা রচনা করেছেন। এছাড়াও তিনি তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের সহযোগিতার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, তুরস্কের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তুর্কী জনগণকে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের নারীরাও তাদের স্বর্ণালংকার খুলে দিয়েছিলেন। এসব বিষয় আমাদের কাছে অত্যন্ত আবেগের। তাই আমরা বাংলাদেশের জন্য মন থেকে কাজ করি। তিনি বলেন, আধ্যাত্মিক ও সম্ভাবনাময় নগরী হিসেবে সিলেটের জন্য আমাদের অন্যরকম ভালোবাসা রয়েছে। তাই আগামীতে সিলেটে বিনিয়োগের পরিকল্পনা তুরস্কের রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে তুরস্কের বাণিজ্যিক সম্পর্ক করোনা মহামারীর মধ্যেও খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এই কঠিন সময়েও প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য দুই দেশের মধ্যে হয়েছে। যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট পরিশ্রমী এবং এখানে বর্তমানে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজ করছে। যার ফলে তুরস্কের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আগামীতে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশাবাদী।
তনিমা আহমেদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবি’র অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আনোয়ার সাদাত, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসোসিয়েট প্রফেসর মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেট এর প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার ড. মাহমুদুল ইসলাম, প্রাইভেট হসপিটাল মালিক সমিতির সভাপতি ডাঃ নাসিম আহমেদ, সিলেট চেম্বারের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল জলিল জব্বার, আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. এম. শহীদুল ইসলাম, সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, পরিচালক মোঃ মামুন কিবরিয়া সুমন, মোঃ সাহিদুর রহমান, মুশফিক জায়গীরদার, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, আলীমুল এহছান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, মোঃ আমিনুজ্জামান জোয়াহির, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, ফখর উস সালেহীন নাহিয়ান, প্রাক্তন সিনিয়র সহ সভপতি ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক মোঃ হিজকিল গুলজার, প্রাক্তন সহ সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, মোঃ আতিকুর রহমান লাহিন, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন, বিডা সিলেট এর পরিচালক জুলিয়া জেসমিন মিলি, প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের ডাঃ এম. শহিদুল ইসলাম, ডাঃ নার্গিস সুলতানা লাকী, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির এসিসটেন্ট প্রফেসর জিয়াউর রহমান, বিসিক এর ডিজিএম ইঞ্জিঃ এম. সোহেল হাওলাদার, সোনালী ব্যাংকের জিএম বাবুল মোঃ আলম, মাউন্ট এডোরা হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর ডাঃ কে এম আখতারুজ্জামান, সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, ইউকেবেট নির্বাহী পরিচালক এম. আসাদুজ্জামান সায়েম সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-আজাদ, সাধারণ সম্পাদক সামির মাহমুদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিলেটের ডাক এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ, ওমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, সিলেট চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিবৃন্দ, সিলেট চেম্বারের সদস্যবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি