বাংলাদেশের উদ্যোক্তারাও এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করছে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩২ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার ডলার বিনিয়োগ করেছে। পরিমাণ কম হলেও বাংলাদেশের জন্য এটি খুবই ভাল সংবাদ। এতদিন দেশের অর্থনীতিতে একটা স্বাভাবিক চিত্র ছিল বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। এজন্য বিশ্বের দেশে দেশে বহুমুখী প্রচার এবং রোডশো হয়েছে। এখনও বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার নানামুখী চেষ্টা চলছে। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সকল দেশই চায় তাদের দেশে বিদেশী বিনিয়োগ হোক। বিদেশ থেকে বিনিয়োগ এলে আসে বৈদেশিক মুদ্রা। চাঙ্গা হয় দেশের অর্থনীতি।
অতীতে বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ ছিল না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে থাকলে সরকার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকে। ২০১৫ সালে সংশোধন করা হয় ‘বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন নিয়ন্ত্রণ আইন’। এর পর থেকেই বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া বিদেশে অর্থ নেয়ার সুযোগ নেই। বৈধভাবে যারা বিদেশে বিনিয়োগ করেছেন তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়েই করেছেন। আইন সংস্কারের পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সীমিত পরিসরে দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি নেয়ার অনুমতি দেয়া শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার উদ্বোধনকালে বলেছেন, ‘আগে আমরা এই দেশে বিদেশী বিনিয়োগ আনার চেষ্টা করতাম। এখন আমরা বিদেশেও বিনিয়োগ করতে পারি। কারণ আমরা তো উন্নয়নশীল দেশ হয়ে গেছি। আমাদের শিল্প উদ্যোক্তারা শুধু নিজের দেশে নয়, বিদেশে বিনিয়োগ করেও সেই পণ্য সেখানে বাজারজাত করতে পারে। আমাদের চাহিদামতো এসব পণ্য নিয়ে আসার সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করতে চাই। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই ইচ্ছে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, আমাদের দেশের পুঁজি বিদেশে বিনিয়োগ করা দেশের জন্য মর্যাদাকরও একটি বিষয়।