করোনা মহামারীর সংক্রমণ এড়াতে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিলো সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। দীর্ঘ বন্ধের পর বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে উঠতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৩৯ তম সভার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছেন শিক্ষার্থীরা। রেজিষ্ট্রার কার্যালয় থেকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্নাতক পর্যায়ের চূড়ান্ত বর্ষ, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা দুই ডোজ কোভিড টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে আবাসিক হলে প্রবেশ করতে পারবেন। এক ডোজ টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে আগামী ২১ অক্টোবর থেকে অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরাও হলে উঠতে পারবেন। এছাড়া আগামী ১ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বশরীরে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে দীর্ঘ বন্ধের পর ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের স্বাগতম জানাতে ঢেলে সাজানো হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, ক্যাফেটেরিয়া ও আবাসিক হলগুলোকে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নেয়া হয়েছে নানাধরণের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, হেলথ কেয়ার সেন্টারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যে আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে, কেনা হয়েছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সরঞ্জাম এবং অস্থায়ীভিত্তিতে নার্স, ওয়ার্ড বয়, ক্লিনার নেয়া হচ্ছে। আইসোলেশন সেন্টারে রুটিনভিত্তিক দায়িত্ব পালন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকবৃন্দ। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র সহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, হল গুলোকে রঙ, করা ও শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য উপযুক্ত করতে অন্যান্য সংস্কার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামছুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হলে ও ক্যাম্পাসে চলাফেরার অনুরোধ জানান তিনি।
করোনা মহামারীর বন্ধে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন পরিক্ষা ব্যবস্থার নীতিমালা তৈরি করে বিভিন্ন বর্ষের চূড়ান্ত পরিক্ষা অনলাইনে নেয়া শুরু করে। এবিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়, চলমান অনলাইনে পরিক্ষা যথারীতি চালু থাকবে এবং নির্ধারিত রুটিন অনুযায়ী অনলাইনেই পরিক্ষা শেষ হবে।
ইতিমধ্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী কোভিড টিকা গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোঃ তাওহীদ হাসান জানান, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদারের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে মঞ্জুরী কমিশন সহ বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়মিত প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে টিকে নিতে পেরেছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় খুলার পর জঙ্গিবাদ সহ যেকোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতির যাতে উত্থান না ঘটে সেবিষয়ে প্রক্টোরিয়াল বডি সচেষ্ট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে অনুরোধ করেছেন প্রক্টর। বিজ্ঞপ্তি