সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব-অপপ্রচারের বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। বিটিআরসি এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখা এ নিয়ে কাজ করছে কয়েক বছর ধরেই। তবু থামছে না অপপ্রচার এবং গুজব ছড়ানোর প্রক্রিয়া। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। সরকারের দিক থেকেও নানা সীমাবদ্ধতার কথা বলা হচ্ছে। এবার সরকারের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এসব অপকর্ম বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। এক লাখ অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টের সমন্বয়ে তারা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ শুরু করেছে। সারাদেশে অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সহযোগিতা দিচ্ছে দলের গবেষণা সেল ‘সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।’ ইতোমধ্যে সারাদেশে ৭০টি কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হবে। মাস্টার ট্রেইনারদের দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে তৈরি করা হবে এক লাখ অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট। গুজব ও অপপ্রচার প্রতিরোধে তারা কাজ করবে। একই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচার করবে সাধারণ মানুষের কাছে।
এ ধরনের কাজ আওয়ামী লীগের নতুন নয়। ‘৯৮ সালে সারাদেশে ভয়াবহ বন্যায় লাখ লাখ মানুষ হয়ে পড়ে পানিবন্দী। বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর বাসস্থান, খাদ্য এবং চিকিৎসা সঙ্কট মেটাতে হিমশিম খেতে হয় সরকারকে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। দলীয় প্রধানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে লাখ লাখ নেতাকর্মী ঝাঁপিয়ে পড়েন দুর্গত মানুষের সহায়তায়। সরকারের পাশাপাশি নেতাকর্মীদের এই উদ্যোগে দুর্গত মানুষগুলো বাঁচার সুযোগ পায়। কেবল বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলাই নয়, পরবর্তী সময় বন্যা পুনর্বাসন কাজেও দুর্গত মানুষের পাশে থেকেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। শুধু ৯৮ সাল নয়, এরপর প্রতিটি বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ।
করোনার সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রী লীগ, যুব লীগসহ সহযোগী সংগঠন কৃষকের পাশে দাঁড়ায় ধান কেটে দেয়ার জন্য। সম্প্রতি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আক্রান্তের ঝুঁকি নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়েছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অক্সিজেন ও করোনা সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। পরিস্থিতির কারণে দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ত্রাণসামগ্রী। এবার তারা উদ্যোগ নিয়েছে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য। গুজব ও সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের এই উদ্যোগে নিশ্চয়ই সমাজের ক্যান্সার হিসেবে চিহ্নিত গুজব-অপপ্রচার বন্ধ হবে।