জৈন্তাপুর থেকে সংবাদদাতা :
করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ প্রায় ১৭ মাস ঘরবন্দি জীবনের ইতি টানল শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাসে ফিরল জৈন্তাপুর উপজেলার শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। নিজ নিজ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
করোনা মহামারী মোকাবিলা করে স্বাভাবিক পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আগামীর শিক্ষাজীবন আরও সুন্দর করার আশাবাদ ব্যক্ত করছেন শিক্ষকরা। প্রাণের ক্যাম্পাসে ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘ সময় পর ক্যাম্পাসে ফেরার অনুভূতিগুলো জানিয়েছেন শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরাও। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থীকে ইউনিফর্ম ছাড়াও ক্লাসে ফিরতে দেখা গেছে।
হরিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আফরোজা আব্বাস (শেফালী) তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলে- আমি সকাল ১০টায় মাস্ক পরে স্কুলে এসেছি। সকালে এসেই বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেক দিন পর স্কুলে সবাই মিলে একসঙ্গে এসে খুব ভালো লাগছে। আমরা বিগত দিনগুলোতে স্কুলে আসতে না পারায় আমাদের অনেক ক্ষতিও হয়েছে। আমরা অটো পাশ চাই না, আমরা লেখা-পড়া করে পরীক্ষার মাধ্যমে পাশ করতে চাই। আশা করি কিছু দিনের মধ্যে সরকার আমাদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন দিবেন।
হরিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজির আলী সরকার বলেন, সরকার ঘোষিত উনিশ দফা নির্দেশনা মেনে দীর্ঘ প্রায় ১৭মাস পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জীবানু নাসক দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেছি। সকালে ছাত্র-ছাত্রীদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই সব শিক্ষার্থীকে ক্লাসে প্রবেশ করানো হয়েছে। বিদ্যালয় খোলার দিনই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায় শিক্ষাঙ্গন। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে আসতে পেরে শিক্ষার্থীরাও বেশ উচ্ছ্বসিত। শিক্ষার্থীরা সবাই সুস্থ ছিল। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য হেন্ড স্যানিটাইজার ও যারা মাস্ক নিয়ে আসেনি তাদের কে মাস্ক দিয়েছি। দুপুর পর্যন্ত সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে ক্লাস নেয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোলেমান হোসেন জানান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই সরকারের নির্দেশনা মেনে আজকের দিনটি পর করেছে এবং ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আগামী দিনের ক্লাস রুটিন জানিয়ে দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক’র সাথে আলাপকালে তিনি বলেন প্রথম দিন হিসেবে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে দেখাযায় সবাই সরকারের দেয়া নির্দেষনা অনুসরন করছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রেণি কক্ষে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সব রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ বশির উদ্দিন, জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোলেমান হোসেন, ২নং জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান, দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ ইয়াহিয়া, উপজেলা একাডেমীক সুপারভাইজার আজিজুল হক খোকন, আওয়ামীলীগ নেতা আলাউদ্দিন প্রমুখ।