চন্দ্রিমায় জিয়ার লাশের অস্তিত্ব পেলে নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইবো – মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ নেই বলে দাবি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি জানিয়েছেন, ডিএনএ টেস্ট করে সেখানে জিয়ার লাশের উপস্থিতি পেলে তিনি নাকে খত দিয়ে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হত্যা রোধে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কেন্দ্রীয় সংসদ।
চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ থাকা না থাকা নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের লাশ নাকি তারা (বিএনপি) খুঁজে পেয়েছেন। এখন তাদের জাতির কাছে জবাব দিতে হবে সেই লাশের ছবি কোথায়। ‘ডিএনএ টেস্ট করে যদি জিয়ার মাজারে তার অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তাহলে আমি নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইব। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, সেখানে জিয়ার কোনো বডি নাই। একটা কাঠের বক্স সেখানে দাফন করা হয়েছিল। সেখানে মানুষ একটা মিথ্যা জিনিসকে শ্রদ্ধা জানাবে এটা হতে পারে না।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। যিনি দেশকে স্বাধীনতা এনে দিলেন, এদেশের কিছু কুলাঙ্গার তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা আত্মস্মীকৃত খুনি তাদের বিচার করেছি, নেপথ্যে যারা ছিল এই মোশতাক-জিয়া বা আরও অনেকেই ছিল, তাদের কিন্তু বিচার হয়নি। তাই আজকে দাবি উঠেছে, কমিশন করে বের করতে হবে বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যে কারা ছিলেন। এটা জাতির দাবি ইতিহাসের প্রয়োজনে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি কোনো ব্যক্তির জন্য বলছি না, আমি গতকালও বলেছি, বিএনপি আমাকে বলেছে টেলিভিশনে, জিয়াউর রহমান মরে গেছে, আপনারা কেন তাকে নিয়ে এত আন্ডার-ইস্টিমেট করছেন? ইতিহাসের প্রয়োজনে সত্যটা উদঘাটন চলছে। ব্যক্তি জিয়ার সাথে আমার কোনো বিরোধিতা নেই। মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তো আমার কোনো বিরোধিতা থাকার কথাও না। দুইটা ব্যাপার, জিয়াউর রহমানের লাশ সেখানে আছে কি না? জিয়াউর রহমান এদেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং রাষ্ট্রপতির মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়েছে। আমি জিয়া হত্যার নিন্দা জানাই। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রচুর। বিচার হবে, নিয়ম মতো বিচার হবে। কারও হত্যার সাথে আমরা একমত নই।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, জিয়াউর রহমানের লাশ তারা খুঁজে পেয়েছেন। এখন তাকে জাতির কাছে জবাব দিতে হবে সেই লাশের ছবি কোথায়। সাধারণ একজন মানুষেরও তো ছবি থাকে আর তিনি রাষ্ট্রপতি তার সবকিছুর ছবি ধারণ করা থাকে। সব তথ্য ধারণ করা থাকে। জিয়াউর রহমানের লাশ পেলেন, ছবিটা দয়া করে দেখান। সেখানে তিনি থামেন নাই, তিনি বলেছেন, জিয়াকে পোস্টমর্টেম করা হয়েছে, ২২টা বুলেট পাওয়া গেছে। তাহলে ছবি দেখান। যদি বলেন এটা বিকৃত হয়েছিল, তাহলে অন্তত মুখের ছবি দেখান।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একটি অনুষ্ঠানে জিয়ার মুক্তিযোদ্ধা খেতাব বাতিল করার প্রস্তাব অনেকেই করেছেন। আমি সেখানে সভাপতি ছিলাম। আমি বলেছিলাম যে, প্রমাণ দেন জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধুর খুনি। আমরা সবই বুঝি জানি, কিন্তু মুখে বললে তো হবে না, প্রমাণ দিতে হবে। বিএনপিকে বিনয়ের সঙ্গে বলছিÍব্যক্তিগত আক্রোশ নয়, ইতিহাসকে তার গতিতে চলতে দিন। ইতিহাসে রাজনৈতিক সব অপরাধীর বিচার করা হবে। সংসদ থেকে নকশা বহির্ভূত যা আছে, সেগুলো অপসারণ করা হবে। দারিদ্র্য, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে পারলে বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ শোধ হবে।’
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস। অতিথি ছিলেন বীরবিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ পাটওয়ারী, আবু সাঈদ মিয়া, আবদুস সামাদ পিন্টু প্রমুখ।