সরকারি প্রণোদনা

29

করোনার বহুল সংক্রমণে সারা দেশ বিপর্যস্ত, নাজেহল। প্রাণঘাতী এই ব্যাধিটির মারাত্মক ছোবলে জনজীবন দিশেহারা, নাকাল। নতুন এই ভাইরাসটি ভিন্নমাত্রার এক জগত উন্মোচনে মানুষের সঙ্গে মানুষের সহজাত মিলনে যে অনাবশ্যক বিঘ্ন তৈরি করে, তারই ফলে দেশে দেশে যে অবরুদ্ধতার কঠিন বলয় তৈরি হয়, তাতে সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের জীবনে যে দুঃসহকাল চেপে বসে সেখান থেকে পরিত্রাণের উপায় এখন অবধি অজানা। সামাজিক দূরত্ব পালন ছাড়াও ব্যক্তিক বিচ্ছিন্নতার যে প্রাচীর তৈরি হয়, সেটাই মানুষকে হরেক রকম বিপন্নতার আবর্তে ফেলে দেয়। গরিব ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের রুজি-রোজগারের ওপরও পড়ে এক অনাবশ্যক স্থবিরতা। করোনা এখন অবধি তার বিধ্বংসী আক্রমণে যে মাত্রায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তাকে সামাল দেয়াও দুঃসাধ্য। সেই এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সীমিত আকারে লকডাউন দিয়েও কোন ইতিবাচক ফল দেখা যায়নি। সঙ্গত কারণে চলতি মাস থেকে কঠিন লকডাউনের আবর্তে দেশকে সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হলে নিম্নবিত্তের অসহায় মানুষের জীবনে যে দুরবস্থার সৃষ্টি তাও এই সংক্রামক ব্যাধির প্রতিক্রিয়া। গণপরিবহন বন্ধ হয়ে গেলে অসংখ্য পরিবহন শ্রমিক বেকারত্বের কোপানলে পড়ে। ব্যবসা-বাণিজ্যও সচল গতিশীলতায় এগিয়ে যেতে বার বার হোঁচট খাচ্ছে। অফিস-আদালত চললেও সীমিত আকারে তা চলছে। এমতাবস্থায় তিন হাজার ২শ’ কোটি টাকার পাঁচ প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়ে সরকারপ্রধান নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ জারি করায় অসংখ্য মানুষের প্রতিদিনের রুজি-রোজগারের যে টানাপোড়েন শুরু হয় তা প্রশমনের লক্ষ্যে আগেও প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছেন। এবারও সেই ধারাবাহিকতায় নতুন সাহায্য সহযোগিতার নির্দেশনা এসেছে খোদ সরকারপ্রধানের কাছ থেকে। এর আগে মোট ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় সব শ্রেণী-পেশা মানুষের সহায়তায় সোয়া ১ লাখ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়। আর এবার দেয়া হলো তিন হাজার ২শ’ কোটি টাকার প্রণোদনা। নিম্ন আয়ের সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এই নতুন ঘোষণা দেয়া প্রণোদনার সাহায্য সহযোগিতা পাবেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যাদের কারণে এই অর্থ সেই অভাবী ও আয়হীন মানুষ যেন যথার্থভাবে এর আওতায় আসতে পারে সেদিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী।