মহামারী করোনার মধ্যে দ্বিতীয় বারের মতো জাতীয় সংসদে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ বাজেট পাস এক স্বস্তিকর সংবাদ। কণ্ঠভোটে নির্দিষ্টকরণ বিল ২০২১ পাসের মধ্য দিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের নতুন বাজেট পাস হলো। এর মধ্য দিয়ে চলতি অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে ৭ লাখ ৯২ হাজার ৬৪২ কোটি ৪৪ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয় করার অনুমতি পাওয়া গেল। প্রস্তাবিত বাজেটে দেয়া বরাদ্দের অনুমোদন পেতে ৫৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এর মধ্যে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই দাবি উত্থাপন প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হলো জাতীয় সংসদে সব রাজনৈতিক দলের সক্রিয় আলেচনা, তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া। জাতীয় বাজেটের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাজেট বরাদ্দ কাটছাঁটের জন্য প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিরোধী দল বিএনপি ও গণফোরামের সদস্যরা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের উত্থাপিত ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে ৬২৫টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। নিয়ম অনুযায়ী সব দাবির ওপর আলোচনার সুযোগ থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে সরকার ও বিরোধী দলের হুইপের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী ৩টি মঞ্জুরি দাবির ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়।
এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ।’ অতীতে বাজেটের ওপর দীর্ঘ আলোচনার রেওয়াজ থাকলেও মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এ বছরও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম সময় আলোচনা করে বাজেট পাস হয়। এবার সম্পূরক বাজেটের ওপর দুই দিন আলোচনা করে পাস করা হয়। মূল বাজেটের ওপর আলোচনা হয় ৫ দিন। অর্থমন্ত্রী গত ৩ জুন প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছিলেন। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে ১ জুলাই থেকেই এই বাজেট বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতি অর্থবছর শেষে দেখা যায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর কিছু অংশ বাস্তবায়িত হয় না। বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী হতে চাই।